গত মার্চ মাসে সমাপ্ত হওয়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা। এসময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হামলায় আহত হয়েছেন আওয়ামীপন্থি এক আইনজীবী। বুধবার (৩ মে) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত আইনজীবী আতাউর রহমান আওয়ামী লীগের পল্লবী থানার আইন বিষয়ক সম্পাদক বলে জানা গেছে। এদিন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরাও অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা ধাক্কাধাক্কিতে লিপ্ত হন।
পরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও আওয়ামীপন্থী আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদূন নুর দুলাল জানান, বিএনপির আইনজীবীদের হামলায় আতাউর রহমান নামের একজন বয়স্ক আইনজীবী আহত হয়েছেন। আরও বেশ কিছু আইনজীবী আহত হয়েছেন, তবে আতাউর রহমানের অবস্থা গুরুতর।
তিনি আরও জানান, আমরা এ বিষয়ে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেবো। আমরা (আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা) ওপরে (দ্বিতীয় তলায়) ছিলাম। তারা (বিএনপির আইনজীবীরা) ছিল নিচতলায়। আমরা তাদের ওখানে যাইনি। কিন্তু তারা আমাদের এখানে (দোতলায়) এসে হামলা করেছে।
আবদুন নূর দুলাল অভিযোগ করে বলেন, আজ আমাদের আইনজীবীদের ওপর সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও রুহুল কুদ্দুস কাজলের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে। আর সহিংসতা বেশি উসকে দিয়েছে মাহবুব উদ্দিন খোকন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল বলেন, এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করেছি, প্রতিবাদ-সমাবেশ করেছি। তবে, হ্যাঁ সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও রুহুল কুদ্দুস কজল উপস্থিত ছিলেন। আমাদের ফোরামের মহাসচিব উপস্থিত ছিলেন। সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। এটা ছিল সম্মিলিত সমাবেশ।
তিনি আরও বলেন, আমরা যখন মিছিল নিয়ে দ্বিতীয় তলা দিয়ে যাচ্ছিলাম (বিক্ষোভ মিছিল সহকারে), তখন তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। হামলা তো আমরা করিনি, তারাই করেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখুক। হামলা কারা করেছে, তা হলেই পরিষ্কার হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৫ ও ১৬ মার্চ হট্টগোল, হামলা, ভাঙচুর, মামলা, সাংবাদিক পেটানো, প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচন। ১৪টি পদের সব ক’টিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়।
যদিও নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল বিএনপি সমর্থকরা। এরপর থেকে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আন্দোলন করে আসছে। এর মধ্যে ৩০ মার্চ একদল আইনজীবী তলবি সভা ডেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির সদস্যবৃন্দের ব্যানারে আয়োজিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যারিস্টার এম. আমীর উল ইসলাম। সভায় আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদকে আহ্বায়ক এবং আইনজীবী শাহ্ আহমেদ বাদলকে সদস্য সচিব করে সুপ্রিম কোর্ট বারে ১৪ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়। বিট্রি