“কৃষি জমি রক্ষার্থে চর কাটা বন্ধ কর”,“পরিবেশ রক্ষা কর,ফসলী জমি বাঁচাও” নারী-পুরুষ মিলে এ রকম নানা শ্লোগানের প্লে-কার্ড বহন করে কুমিল্লায় ভূমিদস্যুদের থাবা থেকে গোমতী নদীর চরের কৃষি জমি রক্ষার দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভূক্তভোগী কৃষকসহ এলাকাবাসী। গতকাল রবিবার সকালে কুমিল্লা সদরের পাঁচথুবী ইউনিয়নের শাহপুর এলাকায় গোমতী পাড়ে ঘন্টা ব্যাপী এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। জমির মালিকদের অভিযোগ, স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও বিএনপি নেতা সফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট ড্রেজার মেশিন দিয়ে চরের মাটি কাটায় কৃষি জমি নষ্ট ও নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
জানা যায়, অবৈধভাবে গোমতী চরের কৃষি জমির মাটি কাটার বিরূদ্ধে গত ১০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন ভোক্তভোগীরা। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন কিছু দালাল কুচক্রি মহল দিবা-রাত্রী ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। চরের মাটি কেটে নদীর তলদেশের সাথে লাগিয়ে ফেলার ফলে বর্ষাকালে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নদীর উভয় তীর সমতল হয়ে যায়। এতে নদীর পাড় ভেঙ্গে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এ বিষয়ে তারা আইনগত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে গতকাল রবিবার সকাল ১০ টায় কুমিল্লায় ভূমিদস্যুদের থাবা থেকে গোমতী নদীর চরের কৃষি জমি রক্ষার দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ভূক্তভোগী জমির মালিকসহ এলাকাবাসী। প্রায় ১ ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ভূক্তভোগী হাজী সুলতান মিয়া, হাজী আবদুস সালাম, মোঃ মিজানুর রহমান, ইসহাক মিয়া, মোঃ মনির হোসেন, মোঃ কামাল হোসেন,খোকন মিয়া সহ আরো অনেকে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তারা দীর্ঘকাল ধরে শাহপুর মৌজার গোমতির ফরিঙ্গা চরে কৃষি কাজ করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তাদের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া মালিকাধীন জমি থেকে একটি সিন্ডিকেট জোরপূর্বক ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিরামহীন মাটি কাটার ফলে হুমকীর মুখে পড়েছে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, পাঁচথুবী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার শফিকুল ইসলাম জনপ্রতিনিধি হয়ে অসহায় মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো মাটি কাটা সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে দিচ্ছেন।এটা লজ্জাজনক। তারা কৃষি জমি রক্ষায় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে জানতে পাঁচথুবী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার শফিকুল ইসলাম এর মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে শফিকুল ইসলাম মেম্বারের ছোট ভাই আবুল হোসেন বলেন,আমরা কৃষি জমি থেকে কোন মাটি কাটছি না। নিয়ম-শর্ত মেনেই ইজারাদারদের পক্ষে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছি। তবে বালু রাখার জন্য আমরা কিছু জমি মালিকদের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে চুক্তিনামা করে লাগিত নিয়েছি। একটি কুচক্রী মহল রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলক আমাদের বিরুদ্ধে এ মানব বন্ধন করিয়েছেন। আমরা কারো জমি থেকে কোন মাটি কাটি নাই। অভিযোগ ভিত্তিহীন।