সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান নিয়ে উস্কানিমূলক মিথ্যা অপপ্রচার ও ধর্মীয় উগ্রবাদী জিহাদে আহবানকারী একজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম- রাসেল সরদার রাজ। এসময় তার হেফাজত হতে ০২টি মোবাইল ফোন ও ০৪ টি সিমকার্ড উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়।
গত ১২ এপ্রিল ২০২২ (মঙ্গলবার) রমনা থানার বেইলি রোড থেকে তাকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ই-ফ্রড টিম।
এ সংক্রান্তে ই-ফ্রড টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার সুরঞ্জনা সাহা ডিএমপি নিউজকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফেইক আইডি “জি হাদের তলোয়ার” খুলে ধর্মীয় উগ্র জিহাদী মতবাদ ও উস্কানিমূলক মিথ্যা অপপ্রচার করে আসছিল এক শ্রেণির অপরাধী চক্র। যার মধ্যে রযেছে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও বাঙালির সংস্কৃতি পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার, দেশে কালেমার পতাকা ওড়ানো ইত্যাদি। বিশেষ প্রাযুক্তিক সহায়তা ও গোপন গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে এই চক্রের অন্যতম সদস্য রাসেল সরদার রাজকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়”।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত রাজ ধর্মীয় উগ্র মতবাদ সম্বলিত পোস্ট ও ভিডিও দেখে প্রথমে রেডিক্যালাইজড হয়। পরে সে ফেইক ফেসবুক আইডি খুলে নিজের পরিচয় গোপন রেখে গাজওয়াতুল হিন্দ নামক একটি ধর্মীয় উগ্র মতবাদী সংগঠনে যোগ দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করে পোস্ট দেয় এবং অন্যদেরকেও যোগদানে আহবান করে।
বিভিন্ন সময়ে দেয়া বিতর্কিত পোস্টসমূহ নিম্নরুপঃ
১।‘‘পহেলা বৈশাখ পালন করা বিদাত। কেউ পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে যাবেন না। গেলে কিন্তু খবর আছে। অনুষ্ঠানে বোমা হামলা হতে পারে। সবাই সাবধান থাকবেন। আর কেউ যদি যান তার পরিণতি হয়তো ভালো হবে না। একসময় রমনা বটমূলের কথা সবার মনে আছে। বোমার কথা। সবাই সাবধান। সাবধান। নিজের জীবন বড় না পহেলা বৈশাখ বড়?’’
২। ‘‘মৃত্যুর অপেক্ষায় রাত জাগা প্রহরি আমি, মৃত্যুকে করিনা ভয়। মৃত্যু আমার খেলার সাথী, মৃত্যু আমার ভাই হাসিমুখে জীবন দিয়ে তাই শহীদ হতে চাই শহীদ হলেই হবে আমার জীবন যুদ্ধে জয় রাসেল সরদার রাজ।’’
৩।‘‘ হে সমস্ত জাহানের সৃষ্টিকর্তা তোমার কাছে একটাই চাওয়া তোমার রাস্তায় যেনো হাসিমুখে শহীদ হতে পারি, রাজ।’’
৪।‘‘ আপনি ভাবছেন আপনি মহৎ। কিন্তু তা না। আপনার উপর জিহাদের দায়িত্ব আছে। আপনি দুনিয়ার তাবেদারি আইন না মেনে আসুন আমাদের দেশে কালেমার পতাকা ওড়ানোর জন্য কাজ করি। আপনার বুদ্ধি ও কৌশল কাজে লাগিয়ে তাগুদ বাহিনীর উপর আক্রমণ করুন। দেশের ২/৪টি গুরুত্বপূর্র্ণ স্থাপনায় হামলা করুন। দেখবেন আস্তে আস্তে তাদের মনোবল ভেঙ্গে পড়বে।’’
৫। ‘‘গাজওয়াতুল হিন্দ ডাকছে আমায়। কালেমার পতাকার জন্য শহীদ হতে প্রস্তুত আছি। আপনিও আসুন। জি* হা* দ করি। অস্ত্র হাতে নেই। দ্বীনের শাসন প্রতিষ্ঠা করি। আমিন।’’
৬। ‘‘গাজওয়াতুল হিন্দ শুরু হওয়ার আগেই আমাদের করণীয়: শায়খ আবূ উমামা হাফিজাহুল্লাহ। গাজওয়াতুল হিন্দের জন্য প্রস্তুতি নিন। বর্তমান সারা বিশ্বে মুসলমানরা নির্যাতিত। অসহায়ের মতো মার খাচ্ছে সর্বত্র। এ থেকে প্রতিয়মান হয়, আমরা খুব শীঘ্রই সে প্রতিশ্রুতি মালহামা ও গাজওয়াতুল হিন্দের দিকেই যাচ্ছি…………………….।’’
গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু হয়েছে।