নওগাঁর মান্দায় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে (২২) নির্যাতনের অভিযোগে শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নির্যাতিতা গৃহবধূ বাদী হয়ে ১০ এপ্রিল (রোববার) স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। তবে ঘটনার পর থেকে স্বামী জাহিদ হোসেন মোল্লা (৩২) পলাতক রয়েছেন। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ নওগাঁ সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের গনেশপুর দালালপাড়া গ্রামের সামির উদ্দিন মোল্লা (৬৫) ও তার স্ত্রী হাজেরা বিবি (৬০)।
মান্দা উপজেলার গনেশপুর দালালপাড়া গ্রামের সামির উদ্দিন মোল্লার ছেলে জাহিদ হোসেন মোল্লার সঙ্গে আট মাস আগে সদর উপজেলার কীত্তিপুর ইউনিয়নের জালম গ্রামের আব্দুল লতিফের মেয়ের বিয়ে হয়। এটি জাহিদ হোসেনের তৃতীয় এবং ওই গৃহবধূর দ্বিতীয় বিয়ে।
জাহিদ বিভিন্ন হাট-বাজারে ছাগলের ব্যবসা করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, আগের দুই স্ত্রী নির্যাতনের কারণে জাহিদকে তালাক নিয়ে চলে যান। এই স্ত্রীকে বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময় নির্যাতন করেন জাহিদ। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা ও অন্যান্য সামগ্রী এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। যৌতুক হিসেবে আরও টাকা না দিতে পারায় বুধবার (৬ এপ্রিল) ওই গৃহবধূর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ওই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই নারীর মা বলেন, বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। তারপরও মেয়ের ওপর নির্যাতন থামেনি। মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনার ভিডিও কেউ একজন ধারণ করেন। পরে সেটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে খবর পেয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জাহিদ হোসেন মোল্লার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, ফেসবুকে ভিডিও দেখার পর ওই গৃহবধূর শশুর-শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বাদী হয়ে স্বামী, শশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পর আটক দুজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি জাহিদকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।