গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেছেন, আমাদের আবেগ-অস্তিত্বের জায়গা ভাষা আন্দোলন। সেটি নিয়ে মাত্র ৩টি গান। বঙ্গবন্ধুর মতো মহান নেতাকে নিয়েও মাত্র ৩টি গান। ব্যক্তিগতভাবে যার যতটুকু মূল্যায়ন; এখন বঙ্গবন্ধুর কথা বললে সমস্যা। ব্যালেন্স করে কথা বলতে হয়, আবার তাদের নেতাদের কথাও। আমরা বলি, যার যতটুকু সম্মান আমরা সেটুকু দিতে চাই।
তিনি বলেন, এখন ইতিহাস নিয়ে কথা বলতে গেলে অনেক হিসাব করে বলতে হয়। কারণ ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে দেবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী বানিয়ে দেবে। বর্তমান সরকার চেতনার ক্ষুরধার বাহক। চেতনায় আঘাত লাগলেই তারা ধরে ফেলে। তাদের কাছে চেতনা যে আসলে কী, সেটা আমরা সবাই জানি।
শুক্রবার (১১ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাঙলার উত্তরাধিকার আয়োজিত ভাষা আন্দোলনের স্থপতি প্রিন্সিপাল আবুল কাশেমের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাঙলা ভাষা : সংকট ও সমস্যার সমাধান করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
নুর বলেন, ভাষা সৈনিক গাজিউল হকের কথায়, সামগ্রিকভাবে ভাষাকে যদি আন্দোলনের ছন্দময় একটি কাব্যে বিবেচনা করা যায়, তাহলে প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম সে কাব্যের উপেক্ষিত নায়ক। ভাষা আন্দোলনে তিনি নায়ক, কিন্তু উপেক্ষিত। আমরা এখন দেখি, যাদের ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে পড়াশোনা নেই, ইতিহাস সম্পর্কে পড়াশোনা নেই এমন বিভিন্ন জনকে ভাষা আন্দোলনের নায়ক বানিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে একজন ব্যক্তি সাংবিধানিক পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর দেশের অবস্থা নিয়ে বই লিখেছেন। কিন্তু প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছেন। তাই আমি বলতে চাই, ভাষা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ভাষা তার জায়গায় আছে। সমস্যা আমাদের প্রয়োগে।
নুর বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে শহীদ মিনার ধুয়ে মুছে চকচক করা হয়। তিন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়া হয়। কিন্তু অন্য সময়ে কুকুর-বিড়াল আর মাদকাসক্তদের আড্ডাখানায় রূপান্তিত হয়ে পড়ে। সেগুলো দেখার কেউ নেই। এক দিনের কৃত্রিমতা দিয়ে কী হবে। যারা সম্মান প্রাপ্য তাদের সম্মান দেওয়া হয় না।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাঙলার উত্তরাধিকারের আহ্বায়ক আবু তৈয়ব হাবিলদার, ঢাবি শিক্ষক সাখাওয়াত আনসারী, সাবেক সচিব কাশেম মাসুদ প্রমুখ।