পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে প্রেমিকের পরামর্শে স্বামীকে ডিভোর্স দেন আঁখি আক্তার নাজনীন (৩০)। এরপর প্রেমিক আব্দুল্লাহ শেখের সঙ্গে দ্বিতীয় সংসার জীবন করেন তিনি। নতুন সংসারে এসে বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রি করতে বলায় আব্দুল্লাহ শেখের (২৪) হাতে খুন হন আঁখি। এ ঘটনায় নিহত আঁখির কথিত স্বামী আব্দুল্লাহ শেখকে বুধবার (২ মার্চ) রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, আঁখি ও তার স্বামী আশুলিয়ার নরসিংহপুরে শারমীন গ্রুপে সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তাদের ১০ বছরের সাংসারিক জীবনে ছয় বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। একই কারখানায় একই পদে কাজ করতেন আব্দুল্লাহ শেখ। কাজের সূত্রে আলাপচারিতায় আঁখি ও আব্দুল্লাহের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে আব্দুল্লাহের পরামর্শে আঁখি তার স্বামীকে (নয় মাস আগে) ডিভোর্স নিয়ে শ্রীপুর এলাকায় আব্দুল্লাহের সঙ্গে সংসার শুরু করেন। সেখানে সাড়ে তিন হাজার টাকায় একটি সেমিপাকা বাসাভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকতেন তারা।
মুক্তা ধর আরও বলেন, নিহত আঁখি তাদের বিয়ের কথা কাবিন রেজিস্ট্রি করার জন্য আব্দুল্লাহ শেখকে বললে সে বিভিন্ন টালবাহানা করতে থাকেন। ঘটনার দিন বিকেল ৫টার দিকে আঁখি বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রি করার বিষয়ে তাগিদ দিলে আব্দুল্লাহ ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর আঁখির মরদেহ ঘরের ভেতর রেখে রাত গভীর হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন। রাত গভীর হলে হাত-পা বেঁধে কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে রাজধানীর আশুলিয়া থানার শিমুলিয়া ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি এলাকার সড়কের পাশে ফেলে যান।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আব্দুল্লাহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলেও জানায় সিআইডি।
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শিমুলিয়া ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি এলাকার সড়কের পাশ থেকে হাত-পা বাঁধা কাঁথা দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় আঁখির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর ২৭ ফেব্রুয়ারি আঁখির বোনজামাই মো. শফিকুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।