কুমিল্লায় র্যাব-১১ সিপিসি-২ বিশেষ অভিযানে কোতয়ালী থানা এলাকা থেকে মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য শাহ মোঃ আলী শাওন(৩৫) গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানায়, আসামী শাহ মোঃ আলী শাওন(৩৫) একজন সৌদিআরব প্রবাসী। সে বিভিন্ন স্থানে নিজেকে সৌদিআরবের একজন ভালো চাকুরীজীবি হিসেবে সফল ব্যক্তির পরিচয় দিয়ে আসছে।
কৌশলে বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে তোলে। সম্পর্কের সুবাধে তাদেরকে সৌদিআররে পাঠিয়ে ভালো চাকুরী প্রদান করেছে বলে জানায়।
শাহ মোঃ আলী শাওন(৩৫) এর টার্গেটই ছিলো বিভিন্ন এলাকার সহজ সরল ব্যক্তিদের। তার প্রতারণার মূল কৌশল ছিল সে প্রথমে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভ্রমন ভিসায় বিদেশে নিয়ে যেত তারপর তার অন্য ব্যক্তির নামধারী পাসপোর্ট দিয়ে ভূয়া আকামা (ওয়ার্ক পারমিট) করে দিত। এই আকামা করে দেয়ার জন্য ভিকটিমের পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিত। ভুয়া আকামার কারণে একাধিক ভিকটিম সৌদি আরবে পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবাস ভোগ করতে হয়েছে।
সম্প্রতি শাহ মোঃ আলী শাওন(৩৫) এক ভুক্তভোগীকে সৌদি পাঠানোর কথা বলে তার কাছ থেকে ১৯ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং পরবীর্ততে সে ভূক্তভোগীকে একটি জাল ভিসার মাধ্যমে সৌদিআরব পাঠিয়ে দেয়।
উক্ত জাল ভিসা নিয়ে ভুক্তভোগী সৌদিআরব প্রবেশ করলে সৌদিআরব পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে এবং সৌদি আদালত তাকে ২৭ মাসের জেল প্রদান করে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ২৭ মাস জেলে থেকে তার পরিবারের সহায়তায় আনুমানিক পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করে সৌদিআরবের জেল থেকে গত বছরের ৫ জানুয়ারি নিজ দেশে ফিরে আসে।
দেশে ফিরে ভুক্তভোগী আসামী শাহ মোঃ আলী শাওন(৩৫) এর পরিবারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে তারা বিষয়টিকে কোনরুপ গুরুত্ব না দিয়ে ভুক্তভোগীকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী বিভিন্ন মাধ্যমে আসামী শাহ মোঃ আলী শাওন(৩৫) এর সাথে যোগাযোগ করলে একইভাবে ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি প্রদান করে বিষয়টি নিয়ে চুপ থাকতে নির্দেশ দেয়।
ভুক্তভোগী যাত্রী একাধিকবার বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংসা করার জন্য চেষ্টা করেও তার কোন সমাধান পায়নি।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর আসামী শাহ মোঃ আলী শাওন(৩৫) বাংলাদেশে আসে এবং তার বাংলাদেশে আসার খবর পেয়ে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ভুক্তভোগী তার বাড়িতে গিয়ে পুনরায় কথা বলতে গেলে বিভিন্ন হুমকি ধমকি প্রদান করে বাড়ি থেকে জোর পুর্বক বের করে দেয়।
এমতবস্থায় নিরুপায় হয়ে ভিকটিম ২২ জানুয়ারি র্যাব-১১,সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর সদস্যরা ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মাঠ পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
গত বুধবার ২৬ জানুয়ারি বিশেষ অভিযান চালিয়ে কোতয়ালী মডেল থানাধীন বল্লভপুর, ১নং কালীর বাজার এলাকার মোঃ আলী আজগর এর ছেলে শাওনকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে র্যাব সদস্যরা।