পাবনায় এরই মধ্যে বিভিন্ন হাট-বাজারে মূলকাটা বা কন্দ পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। চাষিরা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। তবে প্রতি হাটেই দাম কমতে থাকায় চাষিরা চিন্তিত। তারা বলছেন উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজার দর আরও বেশি হওয়া দরকার। দাম আরও কমলে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে তারা জানিয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবার পাবনায় ৯ হাজার তিনশ’ হেক্টর জমিতে কন্দ বা মূলকাটা পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫ শ’ ১৩ মেট্রিক টন।
দেশের অন্যতম বৃহৎ পেঁয়াজের হাট পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রাম হাটে গিয়ে দেখা গেছে, মূলকাটা বা কন্দ পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। কৃষক- ব্যাপারির দরকষাকষি, ওজন করা, কুলি হাঁকাহাকি, পরিবহন শ্রমিকদের ভিড়ে হাট জমজমাট। নিচে ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ১১শ’ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বেচা-কেনা হচ্ছে। অথচ ১০ দিন আগেও ছিল ১২শ’- ১৩শ’ টাকা মণ। এখান থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পেঁয়াজ যাচ্ছে।
আড়ৎদাররা জানান গত বছরের চেয়ে এবার সরবরাহ বেশি। তারা জানান চাষিরা কিছুটা লাভবান হলেও প্রতিহাটেই দাম কমছে। এভাবে দাম কমতে থাকলে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
পেঁয়াজ চাষিরা বলছেন শ্রমিক, জমি চাষ ও সার- কীটনাশকের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এতে তাদের লাভ কম হচ্ছে। বেশ কিছু চাষি পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর জন্য কৃষি মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। দাম না বাড়লে তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে জানান তারা।
বেশ কিছু চাষি অভিযোগ করে জানান, পেঁয়াজ ব্যাপারিরা তাদের ঠকাচ্ছেন। ব্যাপারিরা দাম করে পেঁয়াজ কিনে আড়তে নিয়ে দাম কম দেন। কিন্তু প্রতিবাদ করলে তারা মারমুখী আচরণ করেন। মূলকাটা পেঁয়াজ ক্ষেতে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ দু:খ করে জানান, দাম একটু বাড়লেই কথা ওঠে। কিন্তু দাম কমে গেলে কেউ চাষিদের খবর নেয় না।
এদিকে নতুন মূলকাটা পেঁয়াজ বাজারে ওঠায় চাষির ঘরে থাকা পুরাতন হালি পেঁয়াজ নিয়ে চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। হাটে আসা চাষিরা জানান, তারা দাম বাড়ার আশায় ঘরে পুরোনো পেঁয়াজ রেখেছিলেন। চাষিরা জানান, দামতো বাড়েনি উল্টো তারা এখন ক্ষতিগ্রস্থ।
তারা জানান, নতুন পেঁয়াজ ওঠায় পুরোনো পেঁয়াজ প্রতিমন ১৫-১৬শ’ টাকা মন দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তারা জানান, মৌসুমে পেঁয়াজের যে ওজন ছিল এখন তার অর্ধেকও নেই। এর উপর প্রচুর পেঁয়াজ পচে গেছে। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় উৎপাদন ভালো হয়েছে। এতে চাষিরা লাভবান হবেন বলে তারা আশা করছেন।