রাজধানীর গুলিস্তানে শ্রাবণ পরিবহনের ব্রেক ফেল বাসের ধাক্কায় দুই পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। শ্রাবণ পরিবহনের বাসটি পল্টন থানার একজন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) চালিয়ে নিরাপদ স্থানে নেওয়ার পথে দুর্ঘটনাটি হয়। তার বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সও রয়েছে। এ ঘটনায় তাকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
মুলত এ ঘটনার শুরুটা ঘটে রাজধানীর হানিফ ফ্লাইওভারে। সেখানে ঘাতক বাসটি ওয়ারী থানার পুলিশ কনস্টেবল নাসির উদ্দিনকে ধাক্কা দেয়। এরপরে বাসের মূল চালক ও তার সহকারী বাসটি ফ্লাইওবারের উপর ফেলে পালিয়ে যায়। এতে ফ্লাইওভারে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এ সময় আহত কনস্টেবলকে হাসপাতালে পাঠিয়ে যানজট কমাতে দায়িত্বরত এএসআই বাসটি নিজে চালিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিতে যাওয়ার সময় বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে গুলিস্তানের আহাদ পুলিশ বক্সের কাছে এলে ব্রেক চাপ দিলেও কাজ না করায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারের ওপর উঠে যায়। এতে বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন চারজন পথচারী।কিন্তু বাসটি যে ব্রেক ফেল ছিল পুলিশের এএসআইয়ের আগে থেকে জানতেন না। তাই দুর্ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত ভাবে হয়।
পল্টন থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম হোসেন বলেন, আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, শ্রাবণ পরিবহনের বাসের ধাক্কায় আহত পুলিশ কনস্টেবল নাসির উদ্দিনকে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর দুর্ঘটনার জন্য পুলিশের এএসআই এমাদুল হককে আটক করা হয়েছে এবং বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী একজন বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলা করেছেন।
এসআই শামীম হোসেন আরও বলেন, ঘটনার মূলহোতা হলো শ্রাবন বাসের মূল চালক ও তার সহকারী। বাসটি প্রথমে হানিফ ফ্লাইওভারে কনস্টেবল নাসির উদ্দিনকে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনার পর বাসের চালক ও তার সহকারী পালিয়ে যায়। তখন সেখানে যানজট কমাতে এএসআই এমাদুল হক নিজে চালিয়ে বাসটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আগে থেকেই বাসের ব্রেক ফেল থাকার কারণে গুলিস্তান এসে বাসটি পথচারীদের ধাক্কায় দেয়।
আটক এএসআইয়ের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এএসআই এমাদুল হক পুলিশে কনস্টেবল পদে চাকরি শুরু করেন। তখন তিনি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের গাড়ি চালাতেন। তখন থেকেই তার ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল এবং গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতাও ছিল। পরবর্তীতে এমাদুল পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হন। প্রকৃতপক্ষে এমদাদুল হক তার দায়িত্ব পালন করছিলেন ব্রেক ফেল থাকায় ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত ভাবে হয়েছে।