২০২৬ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আগামীতে জাতিসংঘে যে মহাসচিব আসবে, তা বাংলাদেশ থেকেই হতে হবে।
রোববার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ঢাকাবাসী আয়োজিত জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার, দক্ষিণ কোরিয়া যদি হতে পারে, বাংলাদেশ কেন পারবে না। তবে বললেই তো হবে না। এজন্য আমাদের সে মানের পারসোনালিটি তৈরি করতে হবে। তখন অন্য কোনো দেশ আমাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেও আসবে না।
মন্ত্রী জানান, আগাামী ১-৩ নভেম্বর জাতিসংঘের নেতৃত্বে ক্লাইমেটের ওপর যে ইভেন্ট হবে, আমরা সেই ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি হচ্ছি। আমরা আগামীতে বৈশ্বিক জলবায়ু সমস্যা দূর করতে পারবো। আমরা তিনটি এজেন্ডা দিয়েছি, আশা করছি এজেন্ডাগুলো অর্জনে সফল হবো।
জাতিসংঘ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে যখন যুদ্ধের দামামা বাজছে, তখন শান্তির অন্বেষায় জাতিসংঘ তৈরি হয়। জাতিসংঘ তখন বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার ‘আর কোথাও যুদ্ধ নয়’ কর্মসূচি হাতে নেয়। হয়তো সব যুদ্ধ জাতিসংঘ বন্ধ করতে পারেনি। কিন্তু জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ফলে এখনো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মানবতার জয়গান গাচ্ছে জাতিসংঘ। সেসব দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের অবদান অবশ্যই অনস্বীকার্য।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের জন্যও জতিসংঘের অবদান অনস্বীকার্য। জতিসংঘ হয়তো আমাদের সব আশা-প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। ঠিক যেমন প্যালেস্টাইনের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। জাতিসংঘ আপনাকে বেহেস্তে নিয়ে যেতে পারবে না, তবে জাতিসংঘ আপনাকে দোজখ থেকে কিংবা নরক থেকে বাঁচাবে।
জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা ঝরে পড়ছে, যাদের গ্রহণ করা হয় না, তাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করতে চান। তিনি তার রাজনীতির ৪০ বছরের বিভিন্ন সমস্যা দেখেছেন, যা সমাধান হয় না। তিনি বলেছেন, একমাত্র মানুষই এ সমস্যার সমাধান করতে পারে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীতে মানুষের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠার ছয়টি দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী বিশ্ব আমরা কীভাবে দেখতে চাই, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী সে কথা বলেছেন। এটা পার্টনারশিপের মাধ্যমে সম্ভব। আমরা কেউ যেন ঝরে না পড়ি। বিশ্বজুড়ে উন্নয়ন হবে, এই উন্নয়ন থেকে কেউ যেন বাদ না পড়ে। সব দেশ এ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। যারা সমাজে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, তাদেরও তিনি দেশ গড়ার কজে সম্পৃক্ত করার জন্য প্রস্তাব করেন। সবাই এটা গ্রহণ করেছে।
ড. মোমেন বলেন, এই যে জাতিসংঘের এত উন্নয়ন, এত ভালো কাজ, এর মূলে রয়েছে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর নেতৃত্ব। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্ব বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।