কুমিল্লায় পূজা মন্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননা নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নাশকতাকারীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পূজামন্ডপ পরিদর্শণ করেন সদর (৬) আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। এ সময় তিনি নগরীর বিভিন্ন পূজামন্ডপগুলো পরিদর্শন করে মন্দিরের পুরোহিতের সাথে কথা বলেন, সনাতন ধর্মালম্বী নারী-পুরুষ ও হামলায় আহতদের খোঁজ খবর নেন।
রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত এমপি বাহার ক্ষতিগ্রস্ত ৫টি দূর্গা পূজার জন্য তৈরি করা মন্ডপ ও মন্দিরে যান। এর আগে শনিবার রাতে পবিত্র ওমরাহ হজ¦ পালন শেষে দেশে ফেরেন এমপি বাহার। শনিবার রাতেই কুমিল্লায় আসেন তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত পূজা মন্ডপের মধ্যে প্রথমে তিনি ঘটনার সূত্রপাত নগরীর নানুয়া দিঘীর পাড় দর্পন সংঘের করা পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন । সেখানে স্থানীয় সনাতন ধর্মীয় বিভিন্ন ব্যক্তি বর্গের সাথে কথা বলেন। এর পর ছাতিপট্টি চাঁনমনি কালি মন্দির, রাজগঞ্জ আনন্দময়ী কালিবাড়ি, ঠাকুরপাড়া কালিতলা মন্দির ও সদর দক্ষিন ঘোষ পাড়া মন্দিরে যান।
পরিদর্শন শেষে এপি বাহার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৩ আক্টোবর কুমিল্লায় দূর্গাপূজা চলাকালে পূজামন্ডপ ও মন্দিরে যারা হামলা করেছে তাদের সকলকে খুজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এমপি বাহার বলেন, কুমিল্লা অসাম্প্রদায়িক একটি জেলা, এখানে সকল ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। এ ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরগুলোর সংস্কার করার ঘোষনা দেন এবং সনাতন ধর্মলর্মলম্বীদের বলেন, কেউ কোন প্রকার ভয় পাবেন না, আমি আপনাদের পাশে আছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্তি পুলশি সুপার, সদর সার্কেল মোঃ সোহান সরকার, আদর্শ সদরের নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া আফরিন, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত, কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মোঃ আনওয়ারুল আজিম, কুমিল্লা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শিবু চন্দ্র, সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত দাস টিটু, পিংকু চন্দ কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শহিদ, স্বে”ছাসেবক লীগের আহবায়ক জহিরুল ইসলাম রিন্টু, সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান পিয়াসসহ হিন্দু ধর্মীয় নেতা, প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য উপ¯ি’ত ছিলেন।
উল্লেখ্য গত বুধবার সকালে নগরীর নানুয়ার দীঘিরপাড় এলাকায় দর্পন সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত একটি মন্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে দিনভর নগরী ও জেলাজুড়ে ধর্মপ্রান মুসলমানদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করে। এ সময় সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫০জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ বিপুল পরিমান গুলিবর্ষন করে। এ ঘটনায় পৃথক চারটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।