গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে (১) Serial No: 20024460, SSC 2019, Roll No: 605790, Reg. No: 1610953741, Session: 2017 এ্যাডমিট কার্ড একটি, (২) Serial No: 191013615, SSC 2019, Roll No: 900928, Reg. No: 1610987308, Session: 2017 এ্যাডমিট কার্ড একটি, (৩) SSC 2019, Serial No.DBSC19 0435534, Registration No. 1610953741/2017, Roll No: 605790 লেখা একটি সনদ, (৪) SSC 2019, Serial No. DBST 20 0347783, Registration No. 1610953741/2017, Roll No: 605790, Group: Business Studies, Date of Birth: 10/05/2002 একটি এ্যাকাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, (৫) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা লেখা একটি খাঁকি রংয়ের বড় সাইজের খামের ভিতর হতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে Name & Age Correction Application, পূরণ করা ৫ টি, (৬) WEB BASED RESULT PUBLICAION SYSTEM FOR EDUCATION BOARDS লেখা অনলাইন রেজাল্ট শিট ০২ কপি, (৭) মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা লেখা খাঁকি রংয়ের মাঝারি সাইজের খাম ০৮ টি উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (২৮ আগস্ট, ২০২১) দুপুর বারোটায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম(বার)।
এ ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ভিকটিম নূর তাবাসসুম সুলতানা ২০১৯ সালে ধানমন্ডি কামরুননেছা গভঃ গার্লস হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে। জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য শিক্ষা বোর্ডে দেয়া মোবাইল নাম্বারে গত ২১ আগস্ট একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। ওই বার্তায় তার রোল ও রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ঠিক থাকলেও শিক্ষার্থীর নাম ও পিতা-মাতার নামসহ জন্ম তারিখ পরিবর্তিত দেখতে পায়। তখন তারা স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করে পরিবর্তনের বিষয়ে সত্যতা পায়। এ ঘটনায় ধানমন্ডি মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা রুজু হয়। এ মামলার তদন্ত শুরু করে ডিবি।
ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও জালিয়াতির সাথে জড়িতদের গ্রেফতার সম্পর্কে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃত নূর রিমতি ২০১৯ সলে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর সিটি মডেল কলেজ হতে অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হয়। কিন্তু তার ইতালি যাওয়ার জন্য এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট প্রয়োজন। জাল সনদ তৈরির জন্য সে তার মামা গ্রেফতারকৃত মোঃ জামাল হোসেনের মাধ্যমে এ. কে. এম মোস্তফা কামাল এর সাথে সাড়ে তিন লক্ষ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তি অনুযায়ী মোস্তফা কামাল শিক্ষা বোর্ডের দালাল চক্র গ্রেফতারকৃত মোঃ মারুফ, মাহবুব আলম, ফারুক আহম্মেদ স্বপন, মোঃ আবেদ আলীদের সাথে সমন্বয় করে নূর তাবাসসুম, পিতাঃ মোঃ নূর উদ্দিন, মাতাঃ রোকেয়া সুলতানা এর সার্টিফিকেট সংক্রান্ত জেএসসি এবং এসএসসি পাসের সকল তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর তারা প্রথমে শিক্ষার্থীর নাম, পিতার নাম, মাতার নাম সংশোধনের জন্য শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফরমেটে আবেদন করেন।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা বোর্ডের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের টাকার বিনিময়ে শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটের রেজাল্ট আর্কাইভে নির্ধারিত ফরমেটে সংরক্ষিত কৃতকার্য প্রকৃত শিক্ষার্থী নূর তাবাসসুম এর তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী নুর রিমতির তথ্যসমূহ আপলোডের মাধ্যমে জাল সনদ তৈরি করে। পরবর্তীতে জন্ম তারিখও পরিবর্তন করে নেয়। এমনকি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট সমূহেও পরিবর্তিত শিক্ষার্থীর সংযোজিত তথ্যসমূহ প্রদর্শন করে। উক্ত প্রতারক চক্র ঢাকা শিক্ষা বোর্ডসহ অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখসহ অন্যান্য তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংযোজন করে জাল সনদ তৈরির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
শিক্ষার্থী ও সম্মানিত অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে ইতোপূর্বে যারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড হতে কৃতকার্য হয়েছে তাদেরকে শিক্ষা বোর্ডের রেজাল্ট আর্কিইভে প্রবেশ করে ফলাফল যাচাই করে কোন পরিবর্তন দেখতে পেলে সংশ্লিষ্ট বোর্ড কর্তৃপক্ষ বা পুলিশকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করেন ডিবির এ পুলিশ কর্মকর্তা।
ডিএমপির গোয়েন্দা ডিবি-সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব ফজলুর রহমান এর সার্বিক তদারকীতে ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম ইনচার্জ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব আশরাফউল্লাহ এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়।