কক্সবাজারে গত ৪ দিনে পাহাড় ধস ও পানির স্রোতে নিখোঁজ রয়েছে ২ জন। মারা গেছে ২০ জন। বন্যায় গতকাল পর্যন্ত ৫৫ হাজার ১৫০ পরিবারের ৪ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ধেয়ে আসছে বন্যা। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে বিরামহীন বৃষ্টিতে উপকূলীয় ৭টি জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলাগুলো হচ্ছে- কক্সবাজার, বান্দরবান, বরগুনা, ফিরোজপুর, পটুয়াখালি, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট। এসব জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে শত শত মাছের ঘের। এছাড়া রোপা আমনের বীজতলা ও মৌসুমী সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল, উত্তর পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর মধ্যাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের কিছু জেলায় স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকার কিছু স্থানে স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া ভারতের অরুণাচল, আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদীর পানি বাড়তে পারে। ফলে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, নওগাঁ এবং নাটোরের নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়তে পারে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো থেকে বিশেষ প্রতিনিধি জানান : স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় সমুদ্র বন্দরসমূহকে বন্দরে ৩ নম্বর সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে। সমুদ্র উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আমদানি মালামাল লাইটারিং, হ্যান্ডলিং, পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম- এই পাঁচ বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড় ধসের সতর্কতা রয়েছে। আজ শুক্রবারও দেশের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে বর্ষণ হয়েছে। তবে রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড মংলায় ২৫৩ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রংপুরে ৩৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয় ২৪ মিলিমিটার। পারদ নেমে আসে সর্বোচ্চ ২৮.৫ এবং সর্বনিম্ন ২৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান, দেশের সবকটি বিভাগের অধিকাংশ স্থানে অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া সতর্কবার্তায় জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি গতকাল আরো ঘনীভূত ও স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়ে খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চল ও এর সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
ভারী বর্ষণের সতর্কবার্তায় জানা গেছে, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও পাহাড় ধস তথা ভূমি ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
কক্সবাজার ব্যুরো জানায়, ৪ দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজার জেলার ৭ উপজেলার ৪১৩টি গ্রাম মাতামুহুরী, বাঁকখালী নদীর উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত ৪ দিনে পাহাড় ধস ও পানির স্রোতে নিখোঁজ রয়েছে ২ জন। মারা গেছে ২০ জন । বন্যায় গতকাল পর্যন্ত ৫৫ হাজার ১৫০ পরিবারের ৪ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বান্দরবান থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, টানা বর্ষণে বান্দরবান পার্বত্য জেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। বিচ্ছিন্ন রয়েছে লামা ও আলিকদম উপজেলার সড়ক যোগাযোগ। পাহাড় ধসের প্রবল আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। এছাড়াও বন্ধ আছে থানচি উপজেলা সদরের সাথে তিন্দু ও রেমাক্রি ইউনিয়নের যোগাযোগ। স্থানীয় এলাকাবাসী থেকে জানা যায়, বান্দরবান সদরের আর্মী পাড়া, ইসলাম পুর, বনানি সমিল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
এদিকে লামা উপজেলায় গত সোমবার থেকে টানা বর্ষণের ফলে নদী, খাল ও ঝিরির পানি ফুঁসে উঠে পৌরসভা এলাকার নয়াপাড়া, বাসস্টেন্ড, টিএন্ডটি পাড়া, বাজারপাড়া, গজালিয়া জিপ স্টেশন, লামা বাজারের একাংশ, চেয়ারম্যান পাড়ার একাংশ, ছোট নুনারবিলপাড়া, বড় নুনারবিলপাড়া, উপজেলা পরিষদের আবাসিক কোয়ার্টার, থানা এলাকা, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা বাজাররসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও থানচি উপজেলার বলিবাজার ইউনিয়নের হিন্দু পাড়া ও বাগান পাড়াসহ বিভিন্ন পাড়া প্লাবিত হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় প্লাবিত হয়েছে অনেক গ্রাম। অনেকে যাতায়তের জন্য ব্যবহার করছেন নৌকা এবং বাঁশের ভেলা।
এদিকে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার দুই নদী সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদে স্থানে যেতে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে প্রশাসন। এছাড়াও দুর্গতদের জন্য জেলায় ১৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রশাসন থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্গতদের দেয়া হচ্ছে খাদ্য।
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে বিরামহীন বৃষ্টিতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে শত শত মাছের ঘের। মৌসুমী সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। এছাড়া চলতি আমন ধানের বীজতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায়। বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পল্লী বিদ্যুতের। অন্ধকারে বসবাস করছে গ্রামবাসী। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় গড়ে ৯৩ দশমিক ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে বলে বাগেরহাট কৃষি বিভাগ জানায়। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বর্ষাকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। জেলার শরণখোলা উপজেলার তালবুনিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, রায়েন্দা বাজারের পূর্ব এলাকা ও বান্ধাকাটাসহ সাউথখালীর বিভিন্ন নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ সব এলাকার নিম্নআয়ের মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। এ ছাড়া শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর, মোরেলগঞ্জের পানগুছি, মোংলার পশুর, বাগেরহাটের ভৈরব, দড়াটানাসহ সকল নদ ও নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাতুনে জান্নাত জানান, বিরামহীন বৃষ্টিতে উপকূলীয় উপজেলা শরণখোলায় অসংখ্য পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।
বরগুনা জেলা সংবাদদাতা জানান, লঘুচাপের প্রভাবে একটানা চার দিন যাবৎ অতিবর্ষণ আর ঝড়ো বাতাসে দক্ষিণ উপকূলীয় জেলা বরগুনার জীবনযাত্রা থমকে গেছে। বরগুনা জেলায় অতিভারী বর্ষণে অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে বরগুনার হাজারো মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। ভারি বর্ষণের পাশাপাশি নদ-নদীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হওয়ার ফলে এলাকায় অসংখ্য পুকুর, ঘের পানিতে তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। আউশক্ষেত, আমনের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। ঝড়ো বাতাসে উপড়ে পড়েছে গাছপালা। বরগুনায় ঝড়ে গত ২৭ জুলাই রাতে থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একদিন পর শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপিত হলেও গ্রামগঞ্জ এখনো বিদ্যুৎবিহীন। এতে মুঠোফোনের নেটওয়ার্কও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনা জেলায় ২৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। অতিবর্ষণে বরগুনাসহ জেলার সবগুলো উপজেলায় অনেক এলাকায় পানিতে তলিয়ে গেছে। জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে।
বরগুনা সদরের জেলখানা গ্রামের কৃষক আবদুল বারেক (৪৫) বলেন, ‘শ্রাবণ মাসে এত অল্প সময়ে এমন বিরামহীন ভারীবৃষ্টি দেখিনি। বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে এতে বীজ নষ্ট হয়ে যাবে। এতে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে আমাদের। বরগুনা সদর উপজেলার কিছু মাছচাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অতিবর্ষণে তাদের পুকুর, ঘের পানিতে তলীয়ে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমতলী উপজেলার পূজাখোলা গ্রামের মাছচাষি আমির হোসেন বলেন, তিন একর জমির মাছের ঘেরের অন্তত ৫ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এই এলাকার ২৫টি ঘেরের মধ্যে ১০টি ঘেরই পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হবে। বরিশাল আবহাওয়া কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি লঘুচাপের প্রভাবে চার দিন ধরে প্রবল বর্ষণ ও ঝড়ো আবহাওয়া বিরাজ করছে। তবে বরগুনা ও পটুয়াখালীতে প্রবল বর্ষণ হয়েছে, যা নজিরবিহীন। সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত বহাল আছে।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ এবং ভারী বর্ষণের পানিতে হঠাৎ ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার কৃষকরা। ৫/৬ ফুট পানির নিচে বিস্তির্ণ ফসলের ক্ষেত যেন বিশাল নদী। ক্ষেতে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হলে ফসলের বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা করছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ৩ দিনের ভারীবর্ষণ এবং লঘুচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ১২শত’ হেক্টর পাঁকা আউশ ক্ষেত, ৪শত’ ২০ হেক্টর আমন বীজ তলা এবং ৩শত’ হেক্টর সবজি ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন জানান, আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে আমন বীজ তলার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে আউশ ধান ও সবজির বড় ধরনের ক্ষতি হবে। পানি নেমে গেলে চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলে তিনি জানান।
পটুয়াখালীর দুমকি সংবাদদাতা জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও ঝড়ো বৃষ্টির ফলে দুমকি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। টানা বৃষ্টির ৩দিনে হঠাৎ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অনেক গাছ উপড়ে পড়ে বসতঘর, বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গিয়েছে। কোথাও কোথাও বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গিয়েছে, বন্ধ রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ। প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে বাগানে উপড়ে পড়েছে গাছ। নষ্ট হয়েছে বহু ফসলি জমি, বীজ তলা, তলিয়ে গেছে বহু মাছের ঘের। টানা বৃষ্টি ও ঝড়ে দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিম্নচাপ, ভারী বর্ষণ ও ঝড়ের ফলে নদীর পানি তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে উপকূলের নিমাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৩০টি বসতঘর সম্পূর্ণভাবে এবং ৬৫টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্তসহ পাংগাশিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি রাস্তা ভেঙে গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে।