দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। সদ্য শেষ হওয়া মে মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ৩১০ কোটি ৮১ লাখ ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক গত বছরের মে মাসের চেয়ে ১১২.১১ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ এই মে মাসে গত বছরের একই মাসের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি রপ্তানি আয় দেশে এসেছে। আর এর মধ্য দিয়ে ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ১৩.৬৪ শতাংশ বেড়েছে। অথচ নয় মাস পর্যন্ত অর্থাৎ জুলাই-মার্চ হিসাবে শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ নেতিবাচক (ঋণাত্মক) প্রবৃদ্ধি ছিল।রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, সদ্যসমাপ্ত মে মাসে দেশ থেকে ৩১০ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে,
এই আয় গত বছরের একই মাসের তুলনায় ১১২ শতাংশ বেশি। প্রবৃদ্ধি এত বেশি হওয়ার কারণ হচ্ছে, করোনার ধাক্কায় গত বছরের এপ্রিলের প্রথম তিন সপ্তাহ শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় রপ্তানি তলানিতে নেমে গিয়েছিল। পরের মাস থেকে আবার রপ্তানি বাড়তে থাকে। এই অবস্থায় দেখা দেয় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এ জন্য লকডাউন জারি হলেও শিল্পকারখানা চলছে। ফলে রপ্তানি বাড়ছে। তাতে গত এপ্রিলে রপ্তানিতে ৫০৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য,প্লাস্টিক পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাসে মোট ২ হাজার ৮৫৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি। অনেক দিন পর নিট পোশাকের মতো ওভেন পোশাকের রপ্তানিও বেড়েছে। নিট পোশাকের রপ্তানি সাড়ে ২০ এবং ওভেন পোশাকের রপ্তানি ১ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়েছে। তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপের দেশগুলো লকডাউন তুলে নিতে শুরু করেছে। তাই ক্রয়াদেশ আসছে। তবে আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে আরও কিছু সময় লাগবে। আশা করছি, আগামী অক্টোবরের পর থেকে পোশাক রপ্তানি ভালো অবস্থায় পৌঁছাবে।’ তৈরি পোশাকের চেয়ে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি বেশি হয়েছে। অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ১০৮ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানিও ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
৮৪ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রপ্তানির বিপরীতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে হিমায়িত খাদ্যের সার্বিক রপ্তানি বেড়েছে দশমিক ৯৮ শতাংশ। রপ্তানির পরিমাণ ৪৩ কোটি ডলার। এর মধ্যে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে ২৮ কোটি ৯২ লাখ ডলার। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ কমেছে।