পুলিশ পরিদর্শক ইকবাল বাহার মজুমদার – ওসি বরুড়া থানা কুমিল্লার
সফল অভিযানে অপহৃত ভিকটিম জীবিত উদ্ধার ও অপহরনকারী চক্রের এক সদস্য গ্রেফতার
কুমিল্লা বরুড়া পৌর এলাকা থেকে অপহৃত ১১ বছরের এক শিশুকে বিশেষ কৌশল ও পরিকল্পনার মাধ্যমে ৪ দিন পর জেলার গৌরীপুর এলাকা থেকে জীবিত উদ্ধার করে বরুড়া থানা পুলিশ। গত ১৮ এপ্রিল অপহৃত হয়েছিল এগার বছরের শিশু তানিম। এ দিকে অপহৃত শিশু তানিমকে জীবিত উদ্ধার ও অপহরনকারীকে গ্রেফতার করায় বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইকবাল বাহারের প্রশংসায় মেতে ওঠে পুরো এলাকার সাধারন মানুষ ।
পুলিশ ও অপহৃত শিশুর পরিবার জানায়, চলতি মাসের ১৮ এপ্রিল সকালে এক ম্যাডামের বাসায় প্রাইভেট পড়তে যায় ১১ বছরের শিশু তানিম। দুপুর শেষ হলেও বাড়িতে শিশু তানিম ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন দিনবর অনেক খোঁজাখুজি করে না পেয়ে থানায় নিখোঁজের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করে। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি হওয়ার পর বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে পুলিশ পরিদর্শক নাহিদকে নিয়ে তদন্ত শুরু করে এবং অপহৃত শিশুর পরিবারকে বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
একপর্যায় নিখোঁজ হওয়ার চারদিনের মাথায় ২২ এপ্রিল বৃহ:পতিবার রাতে অপহৃত শিশু তানিমের জেঠা সুলতান আহম্মদের নিকট মোবাইলে কল করে অপহরনকারী চক্রের এক সদস্য। ফোনে তারা জানায় শিশু তানিমকে জীবিত পেতে চাইলে পরদিন শুক্রবার সকালের মধ্যে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে টাকা না পেলে তাকে হত্যা করে ফেলবে বলে জানায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী শিশু তানিমের জেঠা টাকা দিতে রাজী হয়ে যায় এবং তাৎক্ষনিক বিষয়টি ওসি ইকবাল বাহারকে জানায়। এ সময় ওসি ইকবাল বাহার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভিকটিমের পরিবার ও থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত নাহিদ আহমেদকে নিয়ে সারারাত পুলিশি পরিকল্পনা করেন অপহৃত ভিকটিমকে জীবিত উদ্ধার করার জন্য।
পরিকল্পনা অনুযায়ি ২৩ এপ্রিল শুক্রবার ভোরবেলা ভিকটিমের জেঠাকে নিয়ে সাদা পোশাকে পরিদর্শক নাহিদ এক লক্ষ টাকা নিয়ে অপহরনকারীদের দেওয়া ঠিকানা দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর এলাকায় গিয়ে পৌছায়। অপর একটি টিম এসআই বিশ্বজিৎ পাল ও এসআই মেহেদী হাসান প্রস্তুত ছিল পুরো এলাকায়। একপর্যায়ে পুলিশি পরিকল্পনায় চ্যালেন্জিং দায়িত্ব কাধে নিয়ে অপহরণকারী চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেন এবং অপহৃত শিশু তানিমকে জীবিত উদ্ধার করেন। তানিম বরুড়া পৌরএলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে ও স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।
গ্রেফতার অপহরণকারী চক্রের সদস্য আবু ইউসুফ(৩৮) নোয়াখালী জেলার সেনবাগ ঠনারপাড় গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে। ধৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, জনগনের নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের দায়িত্ব। শিশু তানিম অপহরণের বিষয়টি একটি স্পর্শকাতর ঘটনা, এ বিষয়ে পুলিশ সুপার স্যারের সাথে কথা বলেছি, স্যারের দিকনির্দেশনায় অভিযান চালিয়ে তানিমকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘটনাটির অন্তরালে অনেক বিষয় রয়েছে সবগুলো বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য , ২০১৪ সালের ৪ এপ্রিল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে চাঞ্চল্যকর চিকিৎসক হাসিবুল হক হত্যা মামলার (ক্লুলেস হত্যা) রহস্য উৎঘাটন ও আসামি গ্রেফতার করে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিলেন ইকবাল বাহার। ৭ বছরের ব্যবধানে দুই এপ্রিলে দুটি গুরুত্বপুর্ন মামলায় সফল হলেন পুলিশ পরিদর্শক ইকবাল বাহার ।