প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চাই, মানুষ বীমা সম্পর্কে আরও আস্থাশীল হোক। এতে তারা যেন সুফলটা ভোগ করতে পারে। সেজন্য বীমা পদ্ধতির আধুনিকায়ন ও যাবতীয় আইন করে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বীমায় গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। বীমার দাবি পূরণে সতর্ক থাকতে হবে। গ্রাহকের পাওনা সহজে পাওয়ার বিষয়ে যত্নবান হতে হবে। পাশাপাশি আর্টিফিশিয়াল ক্ষতি দেখিয়ে কেউ যেন বীমা দাবি করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সোমবার (১ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বীমা দিবস-২০২১ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
এবারের বীমা দিবসের স্লোগান-মুজিববর্ষের অঙ্গীকার বীমা হোক সবার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে এই সমস্যা আছে। একটা সুবিধার ব্যবহারের চেয়ে অপব্যবহার করতে চায় অনেকে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমি হাতেনাতে ধরতে পেরেছি বলে বললাম। বীমা জীবন ঘনিষ্ঠ সেবা। এই সেবাকে যাতে অন্যভাবে ব্যবহার করতে না পারে, খেয়াল রাখতে হবে। অবশ্য এটা এখন অনেকে কমে গেছে।
তিনি বলেন, বীমার সুফল সম্পর্কে সচেতনতার অভাব আছে। সচেতনতা বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। জাতির পিতা এই সচেতনতা তৈরিতে কাজ করেছিলেন। ১৯৬১ সালের ১ মার্চ আলফা ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে আঞ্চলিক প্রধান হিসেবে যোগদান করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এখানে বসেই ৬ দফা রচনা করেছিলেন। তাই এটা শুধু বীমার নয়, রাজনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। দিনটিকে স্মরণ করে ‘জাতীয় বীমা দিবস’ উদযাপন করা হয়। যারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাই।
সরকার প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা চালু করা হয়েছে। বার্ষিক ৮৫ টাকা দিয়ে একটা পলিসি করতে পারবে। এক্ষেত্রে নতুন বিবাহিত কাপল বীমা করলে সন্তান শিক্ষা সমাপনী পর্যন্ত আর কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না, এরকম ব্যবস্থা করতে হবে। বার্ষিক ২৮৫ টাকা দিয়ে একজন খেলোয়াড়ও নিজের জীবন সুরক্ষিত রাখতে পারবে প্রবাসীদের জন্যও বীমার সুযোগ রাখা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজ করে গেছেন। শূন্য থেকে শুরু করেন। অর্থনৈতিক উন্নতিসহ সব জায়গায় হাত দিয়েছেন। একটি রাষ্ট্র গঠনে সব কাজই তিনি করে গেছেন। উন্নয়নের এই পথেই আসে আঘাত। তাকে হত্যা করা হয়। শুধু তাকে নয় পুরো পরিবারকে। এতে পরিবার শুধু নয় বাঙালি জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ জাতি তাদের সম্ভাবনাকে হারিয়েছে।
সম্মাননাপ্রাপ্ত ও শিক্ষা বীমাপ্রাপ্তদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নিজে গিয়ে সম্মাননা দিতে পারলে ভালো লাগত। কিন্তু করোনা আমাকে একরকম বন্দি করে দিয়েছে। কারণ আমি বের হলে হাজারখানেক লোকের কাজে সম্পৃক্ততা হয়। এতে ঝুঁকি তৈরি হয়। নিজের জন্য তো অন্যের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। তবে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আমরা টিকা নিয়ে আসছি। দেয়াও হচ্ছে। টিকা গ্রহণের পরও স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, এগুলোর মাধ্যমে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইনস্যুরেন্স এসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন ও আর্থিক বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম।
এ জাতীয় আরো খবর..