মন্ত্রণালয়ের একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের পড়তে হচ্ছে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের নামে কোনো কোনো ক্ষেত্রে চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। এমন অভিযোগ উঠেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সুপারিশ ছাড়া যাদের নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ‘বেসামরিক গেজেটে’ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তাদের মধ্য থেকে ৩৯ হাজার ৯৬১ জন মুক্তিযোদ্ধার নামে তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য গত ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
যাচাই-বাছাইয়ের তালিকায় থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের যে নাম প্রকাশ করা হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেরই নাম রয়েছে ভারতীয় তালিকা বা লাল মুক্তিবার্তায়ও।
লাল মুক্তিবার্তায় থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ কেন আবার যাচাই-বাছাই হবে এমন প্রশ্নও রয়েছে অনেকের মনে। কেউ কেউ তা জানতে যোগাযোগ করছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়েও।
মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও মুক্তিযোদ্ধারা এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে এসেছেন। মন্ত্রণালয়ের গেজেট শাখা ও সম্মানি ভাতা যে শাখা থেকে দেওয়া হয়, সেখানে তারা যাচ্ছেন। এসব শাখায় বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে টেলিফোন করেও বীর মুক্তিযোদ্ধারা এসব বিষয়ে জানতে চাইছেন।
এ অবস্থায় মন্ত্রণালয় ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার নতুন করে আরেকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম ভারতীয় তালিকা বা লাল মুক্তিবার্তা বা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৩৩টি প্রমাণের মধ্যে রয়েছে, তারা যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় পড়বেন না। তাদের নাম জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে যাচাই-বাছাইয়ের তালিকায় প্রকাশ হলেও তা যাচাই-বাছাই না করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ‘বেসামরিক গেজেট’ ও ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল’ সুপারিশ করেছে, প্রমাণ পাওয়া গেলে সেসব গেজেট যাচাই-বাছাই না করার জন্য বলা হয়েছে। ওই দিনই (১০ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানোও হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশের অংশ হিসেবে বেসামরিক গেজেট ১৯ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই করা হবে। ১৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এবং মহানগর পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।
যাচাই-বাছাইয়ের আওতাভুক্ত তালিকা এবং এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট (www.molwa.gov.bd) এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে (www.jamuka.gov.bd) পাওয়া যাচ্ছে। এ ধরনের গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কমপক্ষে তিনজন ভারতীয়/লাল মুক্তিবার্তা তালিকাভুক্ত সহযোদ্ধা/সহ প্রশিক্ষণ গ্রহীতার সাক্ষী ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকলে তিনি কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, তা তিনজন ভারতীয়/লাল মুক্তিবার্তা তালিকাভুক্ত বীর সহমুক্তিযোদ্ধার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। ভারতীয়/লাল মুক্তিবার্তা তালিকাভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে এই যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।সুত্র:সনি
এ জাতীয় আরো খবর..