কুমিল্লায় যুবলীগকর্মী জিল্লুর রহমান চৌধুরী জিলানী (৫০) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান দুই কাউন্সিলর , সিনিয়র আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।গত ১২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিহতের ছোট ভাই ইমরান হোসাইন চৌধুরী বাদী হয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। জিল্লু হত্যা মামলায় আব্দুল কাদের (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলায় প্রধান দুই আসামি হলেন-সিটি করপোরেশনের ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসান ও ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুস সাত্তার। এছাড়া মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছে, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক জিএস, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, আদর্শ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আহামেদ নিয়াজ পাবেল ও কুমিল্লা পলিটেকনিক্যাল কলেজের সাবেক ভিপি ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টু। সাবেক কাউন্সিলর খলিলুর রহমানসহ আওয়ামীলীগের একাধিক নেতাকর্মীসহ মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়।
জিল্লুর হত্যায় পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এখানে দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক ও এলাকায় আধিপত্যের বিস্তার নিয়ে বিরোধ ছিল। এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত রয়েছে সকলকে গ্রেফতার করা হবে। এ বিষয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এ মামলার আসামি আব্দুল কাদেরকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানান।
এ দিকে মামলায় আসামি করার বিষয়ে মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ জানায়, জিল্লু একজন যুবলীগ কর্মী, দলীয় কর্মী হিসেবে তার সাথে আমাদের কোন দ্বন্ধ নেই , দুপুরে সামাজিক য্গোাযোগ মাধ্যমে জিল্লুর ঘটনা জানতে পারেন, এছাড়াও তিনি দাবী করেন এই হত্যাকান্ডে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করলে হত্যার মুল কারন বেরিয়ে আসবে বলে জানান, তিনি আরোও বলেন একটি রাজনৈতিক কুচক্রীমহল মামলায় তার নাম জড়িয়ে মামলাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার অপচেস্টা করে যাচ্ছে। অপরদিকে মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টুকে মামলায় আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে , তিনি বলেন, একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের ঘটনাকে আড়াল করে একটি পক্ষ সুযোগ নিতে প্রতিহিংসায় মেতে ওঠে রাজনীতির একটি কুচক্রী মহল। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ তদন্ত করে ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করলে হত্যার মুল কারন জানতে পারবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান। এ দিকে জিল্লু হত্যা মামলায় মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ ও সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টুকে আসামি করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহানগর আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠনের শত শত নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানানো ও ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে দুই নেতার নাম জড়ানোর বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করার বিষয়টি ভাইরাল হয় ।
উল্লেখ্য ১১ নভেম্বর বুধবার সকাল ৭টার দিকে জিল্লুর রহমান স্কুল শিক্ষিক স্ত্রী জাহানারা বেগমকে নিয়ে বাড়ির পাশে রাস্তার উপর গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন।এ সময় মামলায় অভিযুক্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়। আহত জিল্লুকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক) নেয়া হলে জিল্লুরের মৃত্যু হয়। নিহত জিল্লুর সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা গ্রামের প্রয়াত মোখলেছুর রহমান চৌধুরীর ছেলে।সুত্র:সনি।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply