বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ’স্ত্রী’ হয়ে উঠে স্বামীর সুখ-শান্তি, আরাম আয়েশের নিয়ামক, অথচ ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে তা বড় আপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণেই বিপদগ্রস্থ নেতারা নিজ নিজ স্ত্রীকে বেমালুম অস্বীকার করার কিংবা লুকিয়ে ফেলার নানা পথ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ তো রীতিমত কাজীর অফিসে হাজির হয়ে বিয়ের কাবিনসহ পুরো রেকর্ডপত্রই নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টা এমন যে, আপাতত বউ না থাকলেও চলবে, তবু পদটি তার চাইই চাই। বউ নিয়ে এমন বিদঘুটে জটিলতার মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছেন মিরপুর ১৬ আসনভুক্ত বিভিন্ন ইউনিট ছাত্রলীগের একশ্রেণীর নেতা কর্মী। শুধুমাত্র নতুন কমিটিতে নিজেদের নাম লেখানোর জন্য রাজনৈতিক কার্যক্রমের চেয়ে বেশি সময় পার করছেন নিজেদের বউ লুকিয়ে রাখাতে। অনেকে চাইলেও বউয়ের আবদার মেটাতে সাথে নিয়ে ঘুরতে পারছেন না বলে পারিবারিকভাবে দারুণ অশান্তিতে আছেন বলেও জানা যায়। কেউ ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে সরকারী চাকুরী জুটিয়ে নিয়ে চাকুরি করলেও আকড়ে ধরে আছেন বহু মুল্যবান ছাত্রলীগের পদ পদবী। কেউ আবার বোনের বাসায় আশ্রয়ে থেকে ছাত্রলীগের পদ জুটিয়ে এদেশ ওদেশ ঘুরছেন বিমানে। উপরের নেতাদের কাড়ি কাড়ি টাকার বিনিময়ে ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে ঠাঁই জুটছে বিবাহিত ও ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের। সম্প্রতি রুপনগর থানা ছাত্রলীগের কমিটিতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার বিনিময়ে বেশ ক’জন বিবাহিত ও ছাত্রদলের সদস্যদের প্রবেশ করানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা যায় ওই কমিটির সহ সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম জয়, সহ সভাপতি তৈাহিদ আনোয়ার তনয়, সহ সভাপতি আনোয়ারুল আলম উৎস, সহ সভাপতি শামীম আহমেদ,যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সাগর মিয়া বিবাহিত এবং যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম রাসেল যুবদলের ক্যাডার হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তারা কিভাবে নতুন এই কমিটিতে ঠাঁই পেলো বা ঠিক কতো টাকার বিনিময়ে তাদের কমিটিতে ঠাঁই করা হয়েছে সে বিষয়ে ওই কমিটির সভাপতি মারুফ হোসাইন মিঠু বলেন কারা আমাদের নতুন কমিটিতে বিবাহিত তা আমার জানা নেই আর কমিটিতে ঠাঁই পেতে কোন টাকা পয়সার লেনদেন হয়নি। ২ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি জাকির হোসেন বিবাহিত দিনপার করে তার নিজের সমিতির কাজেই, ৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান পারভেজ বিবাহিত, সাধারণ সম্পাদক আল ইত্তেহাদ রোহান পাঞ্জাবী ব্যবসায়ী এবং আওয়ামীলীগ সরকার বিরোধী যা তার ফেসবুকে এক সময় ভাইরাল হয়। বাবা জামাত শিবিরের কর্মী তাকে বাচাঁতেই তিনি হন ৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ৫ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল বিবাহিত, সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহম্মেদ কুমকুম জরি হাউজ নিয়ে পরে থাকে দিনভর। ৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম তুষার সারাদিন নিজের ফার্মেসিতেই দিন পার করেন। সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাওলাদার বিবাহিত মিল্কভিটাতে চাকুরি করে, পল্লবী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম জুম্মন বিবাহিত, সহ সভাপতি গাজী আসলাম বিবাহিত, সাধারণ সম্পাদক আপন হোসেন সেলিম বিয়ে করে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করলেও তার পদ বহাল রয়েছে, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান বিবাহিত, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ নাহিদ বিবাহিত চলন্তিকা মোড়ে ইট বালি সিমেন্ট ব্যবসা নিয়েই দিন কাটে তার, সাংগঠনিক সম্পাদক মিলন ঢালী বিবাহিত, আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিহাব সর্দার নাজমূল বিবাহিত, ৫ নং ওয়ার্ডে ছাত্রলীগের সদ্য নতুন কমিটিতে বেশ ক’জন বিবাহিতরা ঠাঁই পেয়েছে তাদের মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক সালমান মাতবর ও ক্রীয়া সম্পাদক মুশফিকুর রহমানও রয়েছে।