প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রাজনৈতিক শক্তি নির্বাচনে না এলে অপশক্তি মাথা চাড়া দেবে। অপশক্তি প্রতিহত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনী মাঠে থাকতে হবে।
তিনি আজ আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে গণফোরামের সাথে সংলাপকালে বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। আমরা আমাদের দায়িত্ব বলতে চাচ্ছি না। আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বে নেই, আমরা প্রশাসনিক সংগঠন। আমাদের কাজ হবে নির্বাচনে যাতে ভোটাররা নির্বিঘেœ গিয়ে তাদের ভোটাধিকার স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে পারে, এই ব্যাপারে চেষ্টা করবো সর্বাত্মক। আপনাদেরও সহযোগিতা চাইবো। আপনাদের আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে। নির্বাচনের মাঠে যদি আপনারাও থাকেন, আমরাও যদি থাকি, তাহলে কোনো অপশক্তিকে প্রতিহত, প্রতিরোধ করা সহজ হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৭ জুলাই থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ধারাবাহিকভাবে সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই ধারাবাহিকতায় আজ গণফোরাম ছাড়া আরও ২টি দলের সঙ্গে ইসি সংলাপে বসে। দলগুলো হলো- বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও তরিকত ফেডারেশন।
গণফেরামের উদ্দেশ্যে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘রাজনীতি আপনারা নিয়ন্ত্রণ করেন। রাজনীতির সংস্কৃতি ধারণ করা, লালন করা আপনাদের দায়িত্ব। আপনাদের দায়িত্ব অনেক বড়। আপনাদের কাছে ছোট কিন্তু আমাদের কাছে অনেক বড়।
তিনি বলেন, আমাদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা আছে, আমি নির্বাচন করবো এবং আমাকে জিততেই হবে। হারতে যে হতে পারে, এটা কিন্তু কেউ মেনে নিচ্ছে না। মনস্তাত্ত্বিক দৈন্য আমাদের মধ্যে আছে। তাই সহনশীলতা জাগ্রত করা না গেলে সংকট থেকে যাবে।
গণফোরামের নির্বাহী সদস্য মোকাব্বির খান এমপি’র নেতৃত্বে সংলাপে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
পরে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপের সঙ্গে সংলাপে বসে নির্বাচন কমিশন। সংলাপে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানির নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
এ সময় সংসদীয় আসন বাড়ানোসহ ১১টি প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ)। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে দলের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তাফা ভুইয়া প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন।
এদিকে জাতীয় সংসদের অর্ধেক আসনের নির্বাচনে ইলেক্ট্র্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার চেয়েছে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন। এছাড়াও বিশেষ মনিটরিং সেল গঠনসহ ১১টি প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি এমপি’র নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেন। দলের মহাসচিব ড. সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী লিখিত আকারে প্রস্তাবগুলো উত্থাপন করেন।
প্রস্তাবনায় তারা বলেন, ইভিএম সম্পর্কে ভোটারদের পরিচিতি আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে ইউনিয়ন, উপজেলা, থানা ও জেলা পর্যায়ে (ক্যাম্পিং) প্রচারণা ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। বিষয়টি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া প্রচার প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে।
সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ৩১ জুলাই রোববার সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত জাতীয় পার্টি ও বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে ইসির সংলাপে বসার কথা রয়েছে।