আর একদিন বাকী রইল কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের তৃতীয় বারের ভোট উৎসব। আজ সোমবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ হবে প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা। গতকাল দিনভর প্রার্থীরা গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠক ও ব্যক্তিগত প্রচার-প্রচারণার মধ্যে সময় কাটালেন। শেষ মুহূর্তে এসে ভোটের মাঠে তৈরি হয়েছে টানটান উত্তেজনা।
প্রধান তিন প্রার্থী একে অপরের সমালোচনায় সরব হয়েছেন। শেষ মুহূর্তে এসে মেয়র পদে ভোটের মাঠে চলছে নানা সমীকরণ। কে জিতবে, কে হারবে—এমন আলোচনা চলছে নগর জুড়ে। উঠে আসছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের বিষয়টিও। রাজনৈতিক নানা মেরুকরণে ভোটের মাঠে তিন প্রার্থীর (রিফাত-সাক্কু-কায়সার) মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে—এমন সম্ভাবনার কথা বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে, সিটি নির্বাচনে এলাকায় অবস্হান করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ এনে কুমিল্লা সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিনের বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ পর্যন্ত চারটি লিখিত অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মনিরুল হক সাক্কু। সাক্কুর অভিযোগ, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এমপি বাহাউদ্দিন বাহার সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ও সংলগ্ন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও মসজিদের ইমামদের নৌকা প্রতীকের প্রচারে অংশ নিতে নির্দেশ দেন। তবে সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি এবং নির্বাচনি প্রচারণায়ও অংশ নেননি। নৌকার প্রার্থী বলছেন, সাক্কু পরাজয়ের ভয়ে এমন অভিযোগ তুলছেন।
এদিকে, একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই অনেকটা আকস্মিকভাবে গতকাল বিকালে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেন দুই বারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। আট পাতার ঐ ইশতেহারে তিনি নগরীর উন্নয়নে ১৮ দফা অঙ্গীকার করেছেন। ইশতেহারে তিনি কুমিল্লাকে বিশ্বমানের শহরে পরিণত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আহ্বানে সংবাদ সম্মেলন করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন কুমিল্লা মহানগর ও জেলা শাখা। রবিবার সকালে কুমিল্লা টাউন হলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সুজন জেলা কমিটির সভাপতি শাহ মো. আলমগীর খান। এতে লিখিত বক্তব্যে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্র, ভোটার, নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, মন্ত্রী ও সাংসদ, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যম, প্রার্থী ও সমর্থক ও সচেতন নাগরিকদের প্রতি তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনসহ দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
সিটি নির্বাচনকে টার্গেট করে প্রতারকরা সক্রিয়:
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সহিদুর রহমানের সরকারি মোবাইল নম্বর (০১৩২০-১১৩৯৯৬) স্পুফিং করে (সফটওয়্যার দিয়ে অনুরূপ নম্বর বানিয়ে) একটি প্রতারক চক্র আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।