ফরিদপুরে এই প্রথমবারের মতো ২২ জন যৌনকর্মীকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। শাপলা মহিলা সংস্থার উদ্যোগে যৌনকর্মীদের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র তুলে দেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান।
সোমবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে প্রথম পর্যায়ে সিঅ্যান্ডবি ঘাট ও রথখোলার দুইটি যৌনপল্লীর ২২ জন যৌনকর্মীর হাতে জাতীয় পরিচয় পত্র তুলে দেওয়া হয়। এসময় নির্বাচন অফিসের ও শাপলা মহিলা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শাপলা মহিলা সংস্থা সুত্রে জানা যায়, যৌনকর্মীরা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করলেও ছিল না কোনো নাগরিক স্বীকৃতি। কারও কারও জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেও অসম্মানজনকভাবে পেশার স্থলে ‘পতিতা’ এবং ঠিকানা পতিতাপল্লী লেখা ছিল।
এ ব্যাপারে এনজিও সংস্থা ব্লাস্ট ফরিদপুরের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট শিপ্রা গোস্বামী জাগো নিউজকে বলেন, যৌনকর্মীদের সন্তানেরা যখন শিক্ষাজীবনে প্রবেশ করে তখনই ঘটে বিপত্তি। সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করতে গেলে মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন হয়। সেখানে পেশার স্থলে ‘পতিতা’ এবং ঠিকানা ‘পতিতা পল্লী’ লেখা থাকলে বিব্রতকর অবস্থায় পরতে হয় তাদের। আবার অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। শাপলা মহিলা সংস্থার এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
শাপলা মহিলা সংস্থার প্রকল্প সমন্বয়কারী প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যৌনকর্মী ও তাদের শিশুদের উন্নয়নে কাজ করছে শাপলা মহিলা সংস্থা। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে একজন মানুষকে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সে কথা মাথায় রেখেই যৌনকর্মীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হয়। সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করি।
তিনি আরও বলেন, প্রথম পর্যায়ে দুটি যৌনপল্লীর ২২ জন যৌনকর্মীকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। পেশার স্থলে গৃহিণী এবং ঠিকানা হিসেবে রথখোলা ও সিঅ্যান্ডবি ঘাট লেখা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও এর আওতায় আনা হবে।
ফরিদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, শাপলা মহিলা সংস্থা প্রথমে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করে। আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়। পর্যায়ক্রমে সবাইকেই এর আওতাভুক্ত করা হবে।