হবিগঞ্জ জেলার আধুনিক সদর হাসপাতাল থেকে বাবার পরিচয় দিয়ে এক ছেলে নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে নবজাতকদের বিশেষ সেবা ইউনিট থেকে এ চুরির ঘটনা ঘটে। অবশ্য পাঁচ ঘণ্টা পর ওই শিশুটিকে এক মায়ের কোল থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই নারীরও আজ সকালে একটি কন্যাসন্তান জন্ম দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী জানান, দুটি শিশুই মঙ্গলবার সকালে জন্ম হয়। তাদের নবজাতকদের বিশেষ সেবা ইউনিটে রাখা হয়। ছেলে নবজাতকটি কান্নাকাটি করায় একজন তার অভিভাবক পরিচয় দিয়ে নার্সের কাছ থেকে নিয়ে যান। পরে কর্তৃপক্ষ জানতে পারে তিনি প্রকৃত অভিভাবক নন। পরে হাসপাতালেই শিশুটিকে পাওয়া যায়। ঘটনাটি ভুলবশত হয়েছে, নাকি দুরভিসন্ধিমূলকভাবে করা হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আমিনুল হক সরকার জানান, মিসিং হওয়া শিশুটি পাওয়া গেছে। তাকে তার প্রকৃত মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার কাছে ওই শিশুটি পাওয়া গেছে তার মেয়ে শিশুটিকেও পাওয়া গেছে। তাকেও তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওই নবজাতকের নানি সফিনা খাতুন ও ফুপু শামছুন্নাহার জানান, ভোর সাড়ে ৬টায় নবজাতকটি স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেয়। এরপর তার কান্না থামছিল না। এক পর্যায়ে তাকে নবজাকতদের বিশেষ সেবা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাদের কিছু ওষুধ নিয়ে আসতে বলা হয়। ওষুধ নিয়ে যাওয়ার পর ঝাড়ু দেওয়ার কথা বলে তাদের বের করে দেন দায়িত্বরতরা। পরে তারা ভতরে ঢুকে দেখাতে পান নবজাতকটি নেই।
দায়িত্বরতরা জানান, তার বাবা এসে দুধ খাওয়ানোর কথা বলে নিয়ে গেছেন। অথচ এসময় তার বাবা হাসপাতালেই আসেননি। তারা বলেন, শিশুটি সকাল ৯টায় চুরি গেলেও গাইনি ওয়ার্ডের একটি কেবিনে এক নারীর কাছে পাওয়া যায় দুপুর ২টায়।
নবজাতকটির বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিনি বাড়িতে ছিলেন। ছেলে হয়েছে খবর পেয়ে সকালে হাসপাতালে এসে জানতে পারেন তার সন্তান চুরি হয়ে গেছে। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।
সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রসব বেদনা নিয়ে সদর আধুনিক হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি হন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার মড়রা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার। একইদিন রাত সোয়া ৯টায় প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হন আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা গ্রামের মাসুম মিয়ার স্ত্রী আকলিমা বেগম। ফেরদৌস আক্তার মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় ছেলেসন্তান জন্ম দেন। তার দেড়ঘণ্টা আগে ভোর ৫টায় মেয়েসন্তান জন্ম দেন আকলিমা বেগম।
বিকেল ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছিল। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা না হলেও দুই পক্ষের কাউকেই হাসপাতাল ছাড়তে দেওয়া হয়নি।