রাজশাহীর চারঘাটে ছয়টি ইউনিয়নে চতুর্থ ধাপে সম্পন্ন হয়েছে নির্বাচন। নির্বাচনের রাতে ফলাফলও ঘোষণা হয়। তবে ফল ঘোষণার দুদিন পর পুকুর থেকে সিলমারা ব্যালট ও ফলাফলের কাগজপত্র উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ব্যালট পেপার ছিনতাই হয়েছে মর্মে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (২ জানুয়ারি) চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাঙ্গাহীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শলুয়ার বামনদিঘী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার রেজাউল করিম বাদী হয়ে গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে চারঘাট মডেল থানায় মামলা করেছেন। মামলায় কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাই হয়েছে মর্মে তিনি উল্লেখ করেছেন।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘২৬ ডিসেম্বর বামনদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের পর গণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হয়। এরপর রাত ৮টার দিকে নির্বাচনী মালামাল গাড়িতে তোলার সময় পরাজিত মেম্বার প্রার্থী আফাজ আলীসহ অজ্ঞাত ৬০ জন রামদা, হাতুড়ি, চাপাতি ও লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। তারা নির্বাচনী মালামালসহ ব্যালট পেপারের বস্তা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে রাত ১০ টার দিকে প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী মালামাল উদ্ধার করে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তা জমা দেওয়া হয়।
তবে মামলার এজাহারে নির্বাচনের দুদিন পর পুকুর থেকে ব্যালট পেপার উদ্ধারের কথা উল্লেখ নেই, বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘বিষয়টি মামলার বাদীই ভালো বলতে পারবেন। আমার কাজ মামলা গ্রহণ করা। মামলাটি তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
জানতে চাইলে মামলার বাদী বামনদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ‘ভোটের দিন ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী সরঞ্জাম ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা করেছি। ছিনতাইকৃত ব্যালট পেপার ও মালামাল পরে উদ্ধার করে সিলগালা করে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে পুকুর থেকে ব্যালট উদ্ধারের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এজন্য সেটা উল্লেখ করা হয়নি।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল আলম বলেন, মামলায় পুকুর থেকে ব্যালট উদ্ধারের কথা উল্লেখ নেই। তবে ভোটের দিন ব্যালট ছিনতাই ও পুকুর থেকে ব্যালট উদ্ধারের পর সার্বিক ঘটনা মিলেই মামলাটি হয়েছে।
এদিকে, ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী সামগ্রী ছিনতাইয়ের মামলার প্রধান আসামি আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী ছিলাম। ফলাফল ঘোষণায় আমি তৃতীয় হয়েছি। ফল শুনে মনের কষ্টে বাড়ি চলে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্র কে বা কারা হামলা করেছে, তা কিছুই জানি না। অথচ আমাকে প্রধান আসামি বানানো হয়েছে। জড়িতদের বাঁচাতে আমাকে বলির পাঠা বানানো হচ্ছে।’