1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
১২ বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশনা রাষ্ট্রপতির কু‌মিল্লায় ডি‌বির পৃথক অ‌ভিযা‌নে ইয়াবা ফে‌ন্সি‌ডিল আটক ৩ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত – এম সাখাওয়াত হোসেন দে‌শের প্রয়োজ‌নে বিএনসিসির সদস্যরা বিশাল শক্তি হিসেবে কাজ কর‌বে – সেনাপ্রধান কু‌মিল্লায় সাংবা‌দিক‌দের সা‌থে পু‌লিশ সুপা‌রের মত‌বি‌নিময় নারায়নগন্জ মহানগর বিএনপির র‍্যালিতে কৃষক দলের অংশগ্রহন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নারায়ণগ‌ঞ্জে বিএন‌পির র‍্যালি গোপালগ‌ঞ্জে দিনমুজুর‌কে হত্যা মামলায় গ্রেফতার, নবজাতক দুই বোন নিয়ে দিশেহারা ছোট ভাই শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ কর‌তে হ‌বে, না করলে প্রশাসক নিয়োগ হ‌বে- সাখাওয়াত বাংলাদেশ থেকে জাপানি সৈন্যদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিবে

৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন নির্যাত‌নের শিকার সেই গৃহকর্মী খাদিজা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৪৬২ বার পঠিত

২০১৩ সালে রাজধানীর মিরপুরে নির্যাতনের শিকার হয়েও পুলিশের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার পাননি শিশু গৃহকর্মী খাদিজা। উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় অবশেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশের ইতিহাসে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় প্রথমবারের মতো ক্ষতিপূরণ আদায় করা হলো বলে জানা গেছে।

তবে ভুক্তভোগী খাদিজাকে এই টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না, তা সংশ্লিষ্ট থানার নির্বাহী কর্মকর্তা (টিএনও)বলতে পারবেন বলে জানান রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম।

২০১৩ সালে খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনা ব্যাপক সমালোচার তৈরি করেছিল। খাদিজার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। তাকে গরম কিছু দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছিল বলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন।

শিশু খাদিজাও জানিয়েছিল, তাকে প্রায়ই মারধর করা হতো। তবে পরে পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, খাদিজাকে কেউ মারধর করেনি।

খাদিজার ওপর নির্যাতনের ঘটনায় যথাযথ প্রতিকার চেয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে আবেদন করেছিল চিলড্রেন চ্যারিটি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (সিসিবি) নামের একটি সংগঠন। কমিশন খাদিজার নির্যাতনের বিষয়ে মামলা না নেওয়ায় পুলিশের মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন খুঁজে পায়।

তবে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বারবার চিঠি দিয়ে তদন্ত করতে বলা হয়। এই চিঠি চালাচালিতে ছয় বছর পার হয়ে যায়। কোনো প্রতিকার না পেয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সিসিবি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।

পরে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর মিরপুরের গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনায় হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। রায়ের আদেশের চিঠি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে খাদিজার নির্যাতনের বিষয়ে শুনানি করে ক্ষতিপূরণ বা যে কোনো সুপারিশ করতে মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

কমিশনের খসড়া বিধিমালা দ্রুত অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে গেজেট প্রকাশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয় রায়ে। সেইসঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় অনুসন্ধান বা তদন্ত করে সুপারিশ করার ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য কমিশনকে নির্দেশ দেন আদালত।

কোনো সরকারি কর্মকর্তা কমিশনের আদেশ পালন না করলে হাইকোর্টে আবেদন করতেও বলা হয়। খাদিজার নির্যাতনের মামলায় মানবাধিকার রক্ষা এবং প্রতিকার দিতে কমিশন মারাত্মকভাবে অবহেলা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া সেসময় (ঘটনার পরপরই) কমিশন যেভাবে আদেশ দিয়েছে, তাও প্রশ্নবিদ্ধ বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন আদালত।

গত ২৪ জুন ৩১ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী মো. আব্দুল হালিম। আদালতের রায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, মানবাধিকার কমিশন ওই সময়ে বারবার তদন্ত করেও ব্যর্থতার প্রমাণ দিয়েছে, যা মানবাধিকার কমিশনের গাফিলতি।

গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি ফাউন্ডেশন ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করেছিল। সেই রিটের শুনানিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যথাযথ প্রতিকার দিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনায় কেন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, সে ব্যাপারে এক মাসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে স্বরাষ্ট্র সচিবের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান। ওই রিটের শুনানি নিয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হয় ২০২১ সালের ২৪ জুন।

২০১৯ সালে হাইকোর্ট রায়ে মন্তব্য করেন, মানবাধিকার কমিশন আইনে অর্পিত দায়িত্ব পালনে মারাত্মক গাফিলতির পরিচয় দিচ্ছে। মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার রক্ষায় ‘জেগে জেগে ঘুমাচ্ছে’। এরপর হাইকোর্টের রায়ে ৬০ দিনের মধ্যে খাদিজার ওপর নির্যাতনের বিষয়ে শুনানি করে প্রতিকার দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

পরে নির্যাতনের বিষয়ে খাদিজাসহ পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে শুনানি শেষে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

কমিশনের ১১ বছরের যাত্রায় খাদিজার ঘটনায় প্রথমবারের মতো কোনো ভুক্তভোগীর ক্ষতিপূরণের সুপারিশ করা হয়। তবে সেই ক্ষতিপূরণ আদায় না হওয়ায় বিভিন্ন সময় কমিশনের সমালোচনা হয়েছে।

এ বিষয়ে সিসিবির চেয়ারম্যান আবদুল হালিম বলেন, ‌‌‌‌গত এক যুগে এই প্রথম বাংলাদেশের সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে ভুক্তভোগীকে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিলো। মানবাধিকার লঙ্ঘনে সরকারের দায়বদ্ধতার বাস্তব উদাহরণ গত এক যুগে দেশে এটিই প্রথম।

তিনি বলেন, এটি নিপীড়িত মানুষের মানবাধিকারের একটি মাইলফলক অর্জন। এ অর্জন খাদিজা নির্যাতন মামলায় হাইকোর্টের প্রথম রায়ের নির্দেশনার একটি বাস্তব অর্জন। এটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সক্রিয়তার একটি বড় অর্জন।

মানবাধিকার কমিশন এখন থেকে বুক ফুলিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিকার আদায়ে পদক্ষেপ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

খাদিজার জন্য ৫০ হাজার টাকার চেক তাদের হাতে আছে বলে জানিয়েছে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা প্রশাসন সূত্র। সোমবার (৩ জানুয়ারি) চেকটি খাদিজার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com