নিজের পছন্দে বিয়ে করায় লাখ টাকা চুক্তিতে শরিফুল ইসলাম (২০) নামের এক অটোচালককে হত্যা করেছে স্ত্রীর স্বজনরা। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান।
মামলার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ভাড়ায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন শরিফুল ইসলাম। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বনখড়িয়া গ্রামের মৃত নায়েব আলীর ছেলে। ৯ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকালে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন শরিফুল। ওইদিন বিকেলে বনখড়িয়া বাজার থেকে রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট বিপসট গেটে চালকহীন অটোরিকশাটি দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে অটোরিকশার পেছনে থাকা মোবাইল নম্বরে ফোন করে বিষয়টি মালিককে জানান এক ব্যক্তি।
পরদিন অটোরিকশা উদ্ধারের স্থানের সামান্য দূরে গজারি বনের ভেতর থেকে শরিফুল ইসলামের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান স্বজনরা। ওইদিনই শ্রীপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত অটোচালকের বড় ভাই সেকান্দার।
মামলার পর পুলিশ, পিবিআইসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্ত শুরু করেন। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ক্লুহীন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে পিবিআই।
পুলিশ সুপার জানান, পরিবারের অমতে শরিফুল ইসলাম ভাওয়াল মির্জাপুর গ্রামের মঞ্জুরুল ইসলামের মেয়ে কারিমাকে (১৭) বিয়ে করেন। ১০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাড়িতে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কারিমার বড় ভাই খোরশেদ আলমের শ্যালক রাজিব শেখ কারিমাকে পছন্দ করতেন। পারিবারিকভাবে সেখানে বিয়ের কথাও ছিল। এছাড়া কারিমার বড় দুই বোনের স্বামী রাকিব হোসেন ও জুয়েল রানাসহ পরিবারের সদস্যরা কারিমার বিয়েতে রাজি না থাকায় শরিফুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছমত ওরফে তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে হত্যার জন্য এক লাখ টাকায় চুক্তি করেন।
শরীফুল হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ আসামি নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার হিজুলিয়া গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫), শ্রীপুর উপজেলার বনখড়িয়া গ্রামের মো. আমজাদ হোসেনের ছেলে অফ্রিদি (১৯), জেলার জয়দেবপুর থানা এলাকার বাউপাড়া গ্রামের মো. নিয়ত আলীর ছেলে মো. রাকিব হোসেন (২২), জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানা এলাকার দর্জিপাড়া গ্রামের মো. হাসানের ছেলে মো. রাজিব শেখ (২২), ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর থানার মিছিটেঙ্গী গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে জুয়েল রানা (২৭) ও গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বনখড়িয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত শাজাহ উদ্দিনের ছেলে মো. হানিফকে (২৭) আটক করা হয়।