গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বহিষ্কার হওয়ার পর থেকে আ’লীগের যেসব নেতাকর্মী মেয়র জাহাঙ্গীরের অনুসারী তারা অনেকটা চাপে আছেন। অন্যদিকে আ’লীগের অপর অংশের নেতাকর্মীরা মহানগর আ’লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানের বাসভবন, টঙ্গী থানা আ’লীগের কার্যালয়সহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে দেখা করে মতবিনিময় করছেন।
সরেজমিনে টঙ্গীতে আ’লীগের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সেখানে ভিড় করছেন। মহানগর আ’লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মতিউর রহমান মতির বাসায়ও নেতাকর্মীদের ভিড় দেখা যায়। ওই কার্যালয়ে মেয়র জাহাঙ্গীর বিরোধীদের প্রাধান্য বেশি।
স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা গাজীপুরের আ’লীগের কোনো নেতাকর্মী মেনে নিতে পারেননি। বিশেষ করে টঙ্গী থেকেই এর প্রতিবাদটা বেশি হয়। মেয়র জাহাঙ্গীর দল থেকে বহিষ্কার হওয়ায় গাজীপুরের হাজার হাজার নেতাকর্মীর চাওয়া পূর্ণ হয়েছে।
মেয়র জাহাঙ্গীর দল থেকে আজীবনের জন্য বাদ পড়েছেন। এখন তার মেয়র পদ যাওয়ার অপেক্ষা। তার জন্য হাজার হাজার মানুষের জমি, ঘর-বাড়ি, দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়ে জোরপূর্বক রাস্তার জন্য জমি নিয়েছেন তিনি। জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বাদ দেওয়ায় তার প্রতি সাধারণ মানুষের যে ক্ষোভ তা কিছুটা হলেও মিটেছে।
এদিকে, শনিবার মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বাসভবনে আ’লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তারা মেয়রের পক্ষে নানা স্লোগান দেন। তারা বলেন, মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দলের জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তিনি সংগঠনকে চাঁদাবাজি থেকে মুক্ত রেখেছিলেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কারের পর গাজীপুর সিটির গাজীপুর সিটির উন্নয়ন কার্যত নীরব হয়ে যাবে। তিনি দলে থেকে মানুষকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ঘর-বাড়ি ভেঙে রাস্তাঘাট তৈরি করেছিলেন। তা এখন আর সম্ভব হবে না। রাস্তাঘাট তৈরি ও উন্নয়নের জন্য তাকে বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতাকর্মীদের বাধা ও আপত্তির মুখে পড়তে হবে। এতে করে নগরবাসী উন্নয়ন বঞ্চিত হতে পারে।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আফজাল হোসেন সরকার রিপন বলেন, জাহাঙ্গীর আলম দল থেকে বহিষ্কার হলেও নগরীর উন্নয়নে কোনো বাধা হবে না। উন্নয়ন আরও বেগবান হবে। জাহাঙ্গীর আলম ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে হাজার হাজার মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করে রাস্তা নিয়েছেন। এখন এসব ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাবে।