একাধিক বার ধর্ষণে অন্তসত্তা কিশোরীকে জোরপূর্বক ঔষধ সেবনের মাধ্যমে গর্ভপাত করিয়ে মৃত সন্তানকে ধর্মীয় বিধান অনুসরণ না করে দাফন সম্পন্ন করার দায়ে ধর্ষক মামা ও এক সহযোগিকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহ:পতিবার ৭ অক্টোবর কুমিল্লা জেলার লাকসাম মুদাফফরগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার বানিয়া দিঘীরপাড় এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে র্যাব ১১।
র্যাব ১১ সিপিসি ২ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার জুনাসার গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেন এর ছেলে মোঃ শিপন হোসেন (১৯) গত অক্টোবর ২০২০ ইং মাস হতে জানুয়ারি ২০২১ ইং মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তার ১৪ বছরের আপন ভাগ্নিকে ই”ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষন করে। বিভিন্ন সময়ে ধর্ষনের ফলে উক্ত মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে। বিষয়টি প্রথমে ভিকটিমের মা বুঝতে পেরে তার আপন ভাই চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার জুনাসার গ্রামের মৃত মোবারক হোসেনের ছেলে মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) কে জানালে সে বিষয়টি কারো কাছে প্রকাশ করতে নিষেধ করে এবং কাউকে জানালে ভিকটিমের পরিবারকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করে দিবে বলে ভয়-ভীতি দেখায়।
এরই মধ্যে মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) ভিকটিমের পরিবারকে লাকসামে একটি ভাড়া বাড়িতে জোরপূর্বক রেখে আসে এবং সেখানে থাকা অব¯’ায় ভিকটিমকে গর্ভপাত করানোর জন্য জোরপূর্বক ঔষধ সেবন করায়। ঔষধ সেবনের ফলে গত ২৪ মে ২০২১ ইং তারিখে ভিকটিমের পেটে ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভিকটিম একটি মৃত সন্তান প্রসব করে। ভিকটিম মৃত সন্তান প্রসব করার পর কোন ধর্মীয় বিধান অনুসরণ না করেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) উক্ত বা”চাটিকে দাফন করে। পরবর্তীতে মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ভিকটিমের পরিবার ও ভিকটিমকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখায়।
অকাল গর্ভপাত হওয়ার কারণে ভিকটিম মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে মেয়েটির মা বিষয়টি মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) কে জানায় এবং অসুস্থ ভিকটিমকে চিকিৎসা করানোর জন্য টাকা চায়। মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) ভিকটিমের মাকে কোন সাহায্য না করে তাদেরকে লাকসামের ভাড়া বাড়ী থেকে বিতাড়িত করে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বিষয়টি কারো কাছে না বলার জন্য বারবার হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে এবং ধর্ষক মোঃ শিপন হোসেন (১৯) কে আত্মগোপনে রাখে।
ভিকটিমের মা বিষয়টি আত্মীয়-স্বজন এবং স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে সামাজিকভাবে কোন প্রতিকার ও সাহায্য-সহযোগিতা না পেয়ে গত এক সপ্তাহ পূর্বে মোবাইল ফোনে বিষয়টি র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পকে অবহিত করে। তারই প্রেক্ষিতে র্যাব-১১,
সিপিসি-২, কুমিল্লা বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে থাকে। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল ০৭ অক্টোবর ২০২১ ইং তারিখ রাতে কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার মুদাফফরগঞ্জ এবং চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার বানিয়া দিঘীরপাড় এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
উক্ত অভিযানে ধর্ষক মোঃ শিপন হোসেন (১৯) ও তার সহযোগী মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়’কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করে।
এ বিষয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।