কুমিল্লার দেবিদ্বারে ধর্ষণচেষ্টা মামলা না তোলায় কিশোরী ও তার মা-বাবাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করে র্যাব সদস্যরা। এছাড়া পুলিশের অভিযানে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার মূল আসামী কাউছার ও হাসান এখনও গ্রেফতার হয়নি।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো, উপজেলার কুরছাপ গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে নুরুল ইসলাম (৬৮) ও মোস্তফা কামাল (৬১), কাউছারের স্ত্রী নারগিছ বেগম (৩০) এবং আটক মোস্তাফা কামালের স্ত্রী কুলছুম বেগম। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর বাবা জামাল হোসেন ছয় জনের নাম উল্লেখ করে দেবিদ্বার থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা করেন।
র্যাবের প্রেসবিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের কুরছাপ পূর্বপাড়ায় চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম দিকে নুরুল ইসলামের ছেলে হাসান একই বাড়ির এক কিশোরীকে খালি ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে এ ঘটনা জানাজানি হলে ওই কিশোরীর বাবা ৯ জুন দেবিদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর হাসানের পরিবার বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিল। মামলায় আপোষ মীমাংসা না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২০ আগস্ট দুপুরে ওই কিশোরীর মাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করেন হাসানের বড় ভাই কাউছার। যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে পড়ে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, কুমিল্লা র্যাব-১১, সিপিসি-২ ও দেবিদ্বার থানা পুলিশের একটি টিম যৌথ অভিযান চালিয়ে মামলার চারজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কুমিল্লা র্যাব–১১ হেফাজতে তিনজন আসামী রয়েছেন এবং দেবিদ্বার থানায় রয়েছেন একজন। ওই তিনজনকে দেবিদ্বার থানায় হস্তান্তর করা হবে।
কুমিল্লা র্যাব-১১,সিপিসি-২ অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন নাগরিক খবরকে জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নির্যাতনের একটি ভিডিও দেখে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা মামলার এজহারভুক্ত এক নারীসহ তিন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২০ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের কুরছাপ পূর্বপাড়ায় এক কিশোরীর মাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটার একটি ভিডিও গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় রাতে দেবিদ্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।