ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, অপমানে ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে সিলেটে সেচ্ছাসেবক দল। স্থানীয় নেতাদের মতামত তো দূরের কথা কেন্দ্রীয় নেতাদেরও বাস্তবিক পরামর্শ ও মতামত গ্রহণের দায় দেখায়নি সংগঠনের নীতি নির্ধারকরা। এমন অবস্থায় গত ১৭ আগস্ট ঘোষণা করা হয় জেলা ও মহানগর কমিটি। এতেই ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সিলেট স্বেচ্ছাসেবক দলে। এরপই গত ১৮ আগস্ট রাতে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে পদত্যাগ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান। এরই ধারাবহিকতায় গতকাল (বুধবার) একই অভিযোগে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর শাখার স্বেচ্ছাসেবক দলের শতাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করেন।
গতকাল সিলেট নগরীর মিরাবাজারস্থ একটি হল রুমে সংবাদ সম্মেলনে করে ঘোষণা দেন পদত্যাগের তারা। এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জৈন্তাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আলতাফ হোসেন বিলাল। তিনি বলেন, একযুগ ধরে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ব্যানারে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে রাজপথে সক্রিয় ভ‚মিকা রেখে জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছি, তাদেরকে বাদ দিয়ে নিস্ক্রিয় ও অযোগ্য এমনকি কমিটিতে ব্যাংক কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি হাস্যকর কমিটি দেয়া হয়েছে।
রাজপথের পরীক্ষিত পরিশ্রমী নেতা মওদুদুল হক মওদুদ সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহবায়ককে নতুন ঘোষিত কমিটির ৩১নং সদস্য, সিটি কর্পোরেশনের দুই বারের কাউন্সিল আব্দুর রকিব তুহিনকে ৩৮নং সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক বেলালকে সদস্য, সদর উপজেলার আহবায়ক শাহিদুল ইসলাম কাদিরকে সদস্য ও আলতাফ হোসেন বিলালকে ৬১নং সদস্য রেখে করা হয়েছে অপমান অপদস্থ।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেট স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজপথ কাঁপানো আন্দোলন সংগ্রামের ফিরিস্থি তুলে ধরে বলা হয়, সরকারের বিভিন্ন সময় অপপ্রচার, হুলিয়া ও সাজানো রায়ের প্রতিবাদে রাজপথে সকল আন্দোলন-সংগ্রামের ভূমিকায় উপজেলা ও পৌরসভার আন্দোলনের পাশাপাশি জেলা ও মহানগরের সকল কর্মসূচিতে নিজেদের সাধ্যমতো সর্বোচ্চ ত্যাগ ও পরিশ্রম করেছি এবং অর্ধ শতাধিক মামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি। কমিটি ঘোষণায় সেই ত্যাগী নেতাকর্মীদের একফোঁটা ঘামের মূল্যই দেয়নি সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশেষ এক ব্যক্তিকে সিলেট বিএনপিকে লিজ দিয়ে এই দলকে ধ্বংস করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। পদত্যাগকারী নেতাকর্মীদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলেন, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক শাহিদুল ইসলাম কাদির, জৈন্তুাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আলতাফ হোসেন বিলাল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সুজন মিয়া, গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আবুল কালাম, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক হাসান আহমদ,বালাগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক হেলাল আহমদ, গোলাপগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক রাজু আহমদ চৌধুরী,কানাইঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নাজিম উদ্দিন,কানাইঘাট পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মিজানুর রহমান, জকিগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সাইফুল ইসলাম সাচ্চু। একই সাথে পদত্যাগ করেছেন বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতাকর্মীরা।