মঙ্গলবার ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে একটি প্রাচীন মসজিদ ‘অন্যায়ভাবে ধ্বংস’ করার নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান। তারা একে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের মানবাধিকারের উপর আরেকটি আক্রমণ বলে অভিহিত করেছে। মঙ্গলবার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ হরিয়ানার ফরিদাবাদে বড় বিলাল মসজিদ গুড়িয়ে দিয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বারা শাসিত। এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর (এফও) নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয়।
বিবৃতিতে এফও মুখপাত্র অসীম ইফতিখার আহমদ বলেন, ‘বিজেপি-শাসিত হরিয়ানায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বিজেপি-আরএসএস নিয়ন্ত্রিত বিচার বিভাগের সাথে যোগসাজশে প্রাচীন বিলাল মসজিদ অন্যায়ভাবে ধ্বংস করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান।’ বিবৃতিতে ‘মুসলমানদের এবং তাদের মসজিদলোকে হিন্দুত্ববাদ-চালিত বিজেপি-আরএসএস জোটের চিরস্থায়ী টার্গেট’ বলে ‘তথাকথিত ‹বৃহত্তম গণতন্ত্রের পরিপন্থী’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এটি মনে করিয়ে দেয় যে, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট নভেম্বর ২০১৯ সালে একটি বিতর্কিত রায়ে ‘চরমপন্থী হিন্দু দলগুলোকে’ ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের স্থানে রামমন্দির নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিল, যা ১৯৯২ সালে হিন্দু উগ্রপন্থীরা ভেঙে ফেলেছিল। এই কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘প্রকাশ্যে বাবরি মসজিদ ধ্বংসকারী বলে প্রমাণিত ও চিহ্নিত অপরাধীদের খালাস দেয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় বিচার বিভাগও দোষী ছিল।’
এফও আরও বলেছে যে, ২০০২ সালে গুজরাটে এবং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে মুসলিম বিরোধী জঙ্গিবাদের সময় মুসলিমদের এবং তাদের মসজিদগুলোর উপরে ‘রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায়’ আক্রমণ করা হয়েছিল, কোনও বিচারিক জবাবদিহিতা ছাড়াই। ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে এবং ভারতে মুসলমান, তাদের ধর্মীয় স্থান ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে’ লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে বলে এতে যোগ করা হয়েছে। এফও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ, ওআইসি এবং প্রাসঙ্গিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে ‘সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে মুসলমানদের উপরে পদ্ধতিগত ও নিষ্ঠুরভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ভারতকে জবাবদিহি করাতে’ আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, ‘আমরা ভারতের প্রতিটি সংখ্যালঘুর সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই, যার মধ্যে মুসলিম এবং তাদের উপাসনালয় ও সাংস্কৃতিক স্থানও রয়েছে।’ সূত্র : ডন।