পিয়াসা ও মৌয়ের বর্তমান পেশা মডেলিং নয় বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ(সিআইডি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের পেশার বিষয়ে জানতে চাইলে, পিয়াসা মডেলিংয়ের কথা বললেও মৌ মডেল না বলে নিজেই স্বীকার করেছেন। তবে তিনি বিভিন্ন পার্টিতে পারফর্মার (মডেল) বা এন্টারটেইনার হিসেবে অংশ নিতেন। এজন্য তিনি মোটা অংকের পারিশ্রমিকও নিতেন। অপরদিকে, পিয়াসা অতীতে একাধিক বিজ্ঞাপন, উপস্থাপনা এবং রিয়েলেটি শো’য়ের প্রতিযোগী ছিলেন। তবে নিকট অতীত ও বর্তমানে এই সেক্টরে তার কোনও কাজ পাওয়া যায়নি। দুজনের আয়ের উৎস ও পেশার বিষয়ে এখনও তদন্ত চলছে। দুই দফা রিমান্ড শেষে এই দুই নারী বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে পিয়াসাকে ১ আগস্ট রাতে বারিধারা থেকে তাকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তার ঘর থেকে চার প্যাকেট ইয়াবা ও ৯ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। ফ্রিজে পাওয়া যায় সিসা তৈরির কাঁচামাল। একইদিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় মৌ আক্তারকে। তার বাসা থেকে মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে।
আসামিরা যে পরিচয়ই দেক না কেন, মামলার তদন্তের সময় প্রত্যেক আসামির পেশা, বয়স, বিস্তারিত ঠিকানা, পরিচয়, পূর্বের অপরাধ নিশ্চিত হয়ে চার্জশিট বা প্রতিবেদন দিতে হয়। সেক্ষেত্রে পিয়াসা ও মৌয়ের পেশা ও পরিচয় নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে। তারা যেসব তথ্য দিচ্ছে সেগুলো আবার ভেরিফাইড করা হচ্ছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট অপর একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে পিয়াসা ও মৌ কেউই মডেলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত না। তাদের মোবাইলের কথোপকথন, ব্যাংক লেনদেন এসব চেক করা হচ্ছে। বেশ কিছু তথ্য মিলছে। দেশের বিভিন্ন ক্লাব, রিসোর্টে তাদের যাতায়াত ছিল, দেশি-বিদেশি অনেকের সঙ্গেই তাদের সখ্যতা ছিল। আবাসন ব্যবসায়ী, গাড়ি ব্যবসায়ী, হোটেল ব্যবসায়ীসহ অনেকের সঙ্গেই তাদের বিভিন্ন বিষয় কথা হতো। সেসব কথোপকথন যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।’
পিয়াসা ও মৌ গ্রেফতারে পর পুলিশ তাদের মাদক ব্যবসায়ী ও পার্টি আয়োজক বলে দাবি করেছে। তারা বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলেও পুলিশ দাবি করেছে। ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইলিং করে অর্থ উপর্জনের অভিযোগও আনা হয়। তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের কোন মামলা বা লিখিত অভিযোগ করেনি।
পিয়াসা ও মৌয়ের মামলার তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির ঢাকা মেট্রো পশ্চিমের বিশেষের পুলিশ সুপার খালেদুল হক হাওলাদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা মামলার তদন্তের এই মূহূর্তে কোনও মন্তব্য করতে পারবো না। তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষ হলেই তাদের সবকিছুই বের হবে।