চীনা কোম্পানি সিনোফার্ম ও যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে সারাদেশে আবারও গণটিকাদান শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সব মেডিকেল কলেজ, জেলা হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও ২৫০ শয্যার হাসপাতালে সিনোফার্মের টিকাদান শুরু হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত টিকা দেয়া হবে। অন্যদিকে ফাইজারের টিকা দেয়া হচ্ছে ঢাকার সাতটি কেন্দ্রে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে দেশে গণটিকাদান শুরু হয়। কিন্তু টিকা সঙ্কট দেখা দিলে গত ২৫ এপ্রিল সে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। সে সময় টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হচ্ছিল।
সপ্রতি চীনের সিনোফার্ম যুক্তরাজ্যের ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা আসার পর গত বুধবার আবারও গণটিকাদান শুরুর ঘোষণা দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। সে অনুযায়ী দুই মাস ৭দিন পর ফের শুরু হল টিকাদান কর্মসূচি।
তবে এখনও কিছু কিছু জায়গায় টিকাদান পুরোপুরি শুরু হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ঢাকায় ৪৮টি কেন্দ্রের মধ্যে আটটি কেন্দ্র বাদ দেওয়া হয়েছে। সিনোফার্মের টিকা দেয়া হচ্ছে ঢাকার ৪০টি কেন্দ্রে।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল করোনা হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কেন্দ্রে দেয়া হচ্ছে ফাইজারের তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা।
অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, খুলনায় দুটি কেন্দ্রের মধ্যে একটিতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কিছু টেকনিক্যাল প্রবলেমের কারণে আরেকটি কেন্দ্র বন্ধ আছে।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, এখন পর্যন্ত যারা অগ্রাধিকার তালিকায় আছে তাদের টিকা দিচ্ছি। এছাড়া যারা এর আগে নিবন্ধন করেও টিকা পায়নি তাদের টিকা দেয়া হচ্ছে। যারা নিবন্ধন করেছেন কিন্তু কোভিশিল্ড পাননি, তাদের সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ সদস্যসহ অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা কর্মীরাও টিকা পাচ্ছেন।
নতুন করে নিবন্ধন কার্যক্রম খুলে দেয়ার পর গত বুধবার পর্যন্ত টিকার জন্য ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৯ জন নিবন্ধন করেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর আগে অক্সফোর্ডের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জন। ৪২ লাখ ৮৯ হাজার ২১২ জন নিয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ। সব মিলিয়ে অক্সফোর্ডের টিকা নিয়েছেন ১ কোটি ১ লাখ ৯ হাজার ২২৭ জন।
সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে এ পর্যন্ত ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা এসেছে। যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সরকারের হাতে নেই। তাই অন্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজারের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ এবং চীনের উপহার হিসেবে দুই দফায় সিনোফার্মের ১১ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে, যা দিয়ে আবারও গণটিকাদান শুরু হল।