ফেসবুকসহ সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে ট্রল বা হয়রানির শিকার হলে যা যা করণীয়- সে সম্পর্কে জরুরী পরামর্শ ও তথ্যসমুহ
পুলিশ সদর দফতর ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডির) সাইবার পুলিশ সেন্টারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাইবার অপরাধীদের লক্ষ্য বস্তু হলে প্রথমে নিজেকেই কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এরপর দ্রুত নিকটস্থ থানা-পুলিশকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে। এছাড়াও পুলিশ সদর দফতর ও সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে সরাসরি গিয়ে কিংবা তাদের হটলাইন, ইমেইল ও ফেসবুক পেজের ইনবক্সের মাধ্যমে অভিযোগ জানাতে পারেন।
এরপর পুলিশ নিজ উদ্যোগেই আপনার অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে আইনি সহায়তা দিতে এগিয়ে আসবে। অসংখ্য ভুক্তভোগী এভাবে তাদের কাছ থেকে আইনি সহায়তা নিচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সিআইডির হটলাইন নম্বর হচ্ছে— ০১৭৩০৩৩৬৪৩১ ইমেইল অ্যাড্রেস: smmcpc2018@gmail.com ফেসবুক পেজ হচ্ছে: http://www.facebook.com/cpccidbdpolice https://www.facebook.com/BangladeshPoliceOfficialPage
ফেসবুক ভিত্তিক বিভিন্ন অপরাধী চক্র কিংবা ব্যক্তির ট্রলের শিকার হলে যেভাবে আইনি সহায়তা নিতে পারবেন— ফেসবুক ভিত্তিক বিভিন্ন অপরাধের ক্ষেত্রে মামলায় আইনের যেসব ধারা সাধারণত যুক্ত করা হয়, সেগুলো হচ্ছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৪, ২৫, ২৬, ২৯ ও ৩৪ ধারা। এসব ধারায় বলা হয়েছে— পরিচয়পত্র প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণ। আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শন, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ ও প্রকাশ ইত্যাদি। অনুমতি ছাড়া পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহার। মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার এবং হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ ও দন্ডের ক্ষেত্রে এসব ধারা ব্যবহার করতে পারেন।
পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনেরও আশ্রয় নিতে পারেন ভুক্তভোগী। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২ এর ৮(১), ৮(২), ৮(৩) ও ৮(৭) ধারায় বলা হয়েছে— পর্নোগ্রাফি উৎপাদন, এর মাধ্যমে অন্য কোনও ব্যক্তির মর্যাদাহানি বা ভয়ভীতির মাধ্যমে অর্থ আদায়, পর্নোগ্রাফি সরবরাহ ও পর্নোগ্রাফি অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বা সহায়তা করার অপরাধ। এছাড়াও সংগঠিত অপরাধগুলোর ক্ষেত্রে ১৮৬০ সালের প্রযোজ্য দন্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো মামলায় সংযোজন করা যেতে পারে। যেকোনও একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সহায়তাও নিতে পারেন এসব মামলা বা অভিযোগ দায়েরের আগে। এতে পরবর্তী সময় আদালতে ভুক্তভোগীর অভিযোগ প্রমাণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
ফেসবুকে কারও ছবি এডিট করে অশালীন বা কুরুচিপূর্ণ ছবির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে অন্য কেউ অ্যাকাউন্ট খুললে, বা ছড়িয়ে দিলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ জানাতে হবে।
তার আগে সংশ্লিষ্ট পোস্টের লিংকসহ স্ক্রিনশট এবং পোস্ট প্রদানকারী অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল লিংক সংগ্রহ করে রাখতে হবে। ফেসবুকের ইনবক্স, কমেন্টস ও টাইমলাইনে বাজে মেসেজ বা ছবি পাঠিয়ে কাউকে উত্যক্ত করলেও উত্ত্যক্তকারীর বাজে মেসেজ বা ছবি,পোস্টের লিংকসহ স্ক্রিনশট, মেসেজের স্ক্রিনশট এবং উত্ত্যক্তকারীর অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল লিংক সংগ্রহ করে থানায় যোগাযোগ করতে হবে। কারও কোনও গোপনীয় বা ব্যক্তিগত কনটেন্ট ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়া হলে, পুলিশের সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোর কাছে অভিযোগ জানানো ছাড়াও ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছেও রিপোর্ট করতে হবে।