নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মন্দী থেকে অপহৃত কলেজছাত্রকে উদ্ধারসহ চারজনকে গ্রেফতারের মামলা এবং অভিযোগপত্র মাত্র ৯ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার এই ঘটনাগুলো পর্যায়ক্রমে ঘটে,যা বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নরসিংদী জেলা পুলিশ বলেছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে কলেজছাত্র সবুজ মোল্লা (১৮) শহরের শালিধা এলাকা থেকে ব্রাহ্মন্দী এলাকায় পড়তে যান। পড়ে বাড়ি ফেরার পথে বেলা ১১টার দিকে নরসিংদী সরকারি কলেজ-সংলগ্ন স্থান থেকে তাঁকে জোরপূর্বক একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় তুলে নেন চার যুবক। পরে অপহরণকারীরা তাঁকে শিবপুর উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের একটি পুকুরপাড়ে নিয়ে যান। এ সময় তাঁর পকেটে থাকা চার হাজার টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় অপহরণকারীরা। পরে ওই মুঠোফোনের মাধ্যমে সবুজের মামাকে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে তাঁকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
জেলা পুলিশ আরও বলছে, নরসিংদী সরকারি কলেজের সামনে এই অপহরণের ঘটনা দেখেন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার মাধ্যমে ঘটনাটি পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আশরাফুল আজীম জানতে পারেন। পরে এসপির নির্দেশে জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাসারের নেতৃত্বে কলেজছাত্র সবুজ মোল্লাকে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন। অপহরণের ঘটনার দুই ঘণ্টার মধ্যে শিবপুরের ঘাগটিয়া গ্রামের একটি পুকুরপাড় থেকে তাঁকে উদ্ধার এবং এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটক করে ডিবি। এ সময় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে চার হাজার টাকা, ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা ও একটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়। বিকেল পাঁচটার দিকে ওই অপহরণের ঘটনায় নরসিংদী মডেল থানায় মামলা হওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যেই আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। পরে আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সবুজ মোল্লা শহরের ব্রাহ্মন্দী এলাকার ন্যাশনাল কলেজ অব এডুকেশন নামের একটি বেসরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ও সদর উপজেলার চরাঞ্চল করিমপুরের বাদল মোল্লার ছেলে। অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজন হলেন নরসিংদী শহরের সংগীতা এলাকার নাদিম মিয়া (১৯), মো. আরিফ মিয়া (২০), ভেলানগর এলাকার প্রান্ত চন্দ্র দাস ও রায়পুরা উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকার মো. মামুন (২৫)।
এসপি কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, সকালে অপহরণ, দুপুরে উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তার, বিকেলে মামলা আবার সন্ধ্যায়ই দেওয়া হয়েছে অভিযোগপত্র। কলেজছাত্রের বক্তব্য, অন্যান্য আলামত বিশ্লেষণ ও তদন্ত শেষে এ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এত দ্রুত মামলার সব কার্যক্রম শেষ হওয়ায় ভুক্তভোগী ও মামলার বাদীপক্ষও খুশি।