করোনায় মারা যাওয়া মহিলার মৃতদেহ দাফন নিয়ে গ্রামবাসীর কঠোর বাঁধা ও তাদের নির্মম অমানবিক আচরণে আশাহত না হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার পথ হেটে গিয়ে মৃতদেহ দাফন করে কুমিল্লার বিবেক টিমের সদস্যরা। কুমিল্লা সদর দক্ষিন উপজেলার বাঘমারা উত্তর মনোহরপুর গ্রামে এ অমানবিক ঘটনা ঘটে।
মানবিক টিম বিবেক চেয়ারম্যান জানায়, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত সোমবার রাতে কুমিল্লা সদর(দঃ) উপজেলার বাঘমারা উত্তর মনোহরপুর গ্রামের মো ফিরোজ মিয়ার স্ত্রী পারুল বেগম(৫৫) করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
করোনায় পারুল বেগমের মারা যাওয়ার খবর শুনে গ্রামের কথিত মাতব্বর ও কর্তারা কবরস্থানের প্রবেশ পথে নতুন বেড়া দিয়ে তালা মেরে দিয়েছে কারন কবরস্থানে করোনায় মৃত্যু হওয়া মহিলাকে দাফন করতে দেওয়া হবে না । এই খবর মরহুমার স্বামী ও ছেলে শুনার পর মরহুমার লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেলে রেখে বাড়িতে চলে যাওয়ার সময় একজন মানবিক ব্যক্তি ঘটনাটি “বিবেক” এর প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ইউসুফ মোল্লা টিপুকে ফোনে বিস্তারিত জানায়। এ সময় অমানবিক ঘটনা শুনে ইউসুফ মোল্লা টিপু “বিবেক” সদস্যদের নিয়ে তাৎক্ষনিক কুমেক হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে মরদেহ নিয়ে মরহুমার গ্রামের বাড়িতে যায়। এ সময় গ্রামের মাতব্বর ও কর্তাদের কোন ভাবে ম্যানেজ করা সম্ভব হয়নি। করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস থাকে না সর্ব বিষয়ে বুঝানোর পরও মসজিদ কমিটির লোকজন লাশ বহনের খাট পর্যন্ত ব্যবহার করতে দেয়নি! একপর্যায়ে কোন সমাধান ও উপায়ন্তর না দেখে বিবেক চেয়ারম্যান টিপু ও টিমের সদস্যরা বৃষ্টি ভেজা কাঁদাপথ ও ধান ক্ষেতের মাঝ দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার পথ মরদেহ বহন করে অন্যদিক দিয়ে কবরস্থানে প্রবেশ করে মৃতদেহ দাফন সম্পুর্ন করেন। এ বিষয়ে বিবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ মোল্লা টিপু গ্রামের কথিত মানুষরূপীদের কিছু বলার নেই বলে তিনি আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিন এর নিকট দোয়া করে বলেন যারা আজ দাফনে এই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ যেন তাদের হেদায়েত করে। আধুনিক যুগে এভাবে মৃত মানুষের সাথে অমানবিক আচরণ কুমিল্লার মানুষ হিসেবে তিনি কখনও আশা করেন নাই বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন।
আমাদেরকে আরোও সচেতন হতে হবে । আর যেন এ ধরনের অমানবিক আচরন কোথায়ও না ঘটে।