দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম আরেক দফা বাড়াতে চায় উৎপাদন ও বিপণনকারী কোম্পানিগুলো। সরকারকে চিঠি দিয়ে তারা জানিয়েছে, নতুন করে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হবে ১৪৪ টাকা, যা আগের চেয়ে ৫ টাকা বেশি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর আগে গত ১৫ মার্চ ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছিল। তখন এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ঠিক করা হয় সর্বোচ্চ ১৩৯ টাকা, যা এর আগে ১৩৫ টাকা ছিল।
ভোজ্যতেল উৎপাদনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে চিঠি দিয়ে নতুন দরের বিষয়টি জানায়। আইন অনুযায়ী, দাম বাড়ানোর আগে তা ট্যারিফ কমিশনকে জানাতে হয়। সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি ১৫ দিন পরপর নতুন দাম ঠিক করার কথা ছিল।
চিঠি সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভোজ্যতেলের মূল্য পুনর্নির্ধারণের জন্য সমিতির পক্ষ থেকে ১০ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ট্যারিফ কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এতে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম প্রস্তাব করা হয়েছিল ১৫০ টাকা। সমিতির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে ট্যারিফ কমিশন ২৯ মার্চ মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি পর্যালোচনায় রয়েছে বলে জানায়।
সমিতি বলছে, এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম আরও বেড়েছে। তবে পবিত্র রমজানের কথা বিবেচনা করে বিপণনকারীরা লিটারে ৭ টাকা ছাড় দিয়ে নতুন মূল্য প্রস্তাব করছে। এই দর ২৪ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।
নতুন দর অনুযায়ী, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১২২ টাকা ও পাঁচ লিটারের বোতল ৬৮৫ টাকা এবং পাম সুপার তেল ১১৩ টাকায় বিক্রি হবে। এতে খোলা সয়াবিনের দাম বাড়বে লিটারে ৫ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলে বাড়বে ৫৫ টাকা। পাম সুপার তেলের দাম বাড়বে লিটারে ৪ টাকা। অবশ্য বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোম্পানিগুলো এখনো দাম বাড়ায়নি।
সরকার ১১ এপ্রিল ভোজ্যতেল আমদানিতে ৪ শতাংশ অগ্রিম কর প্রত্যাহার করে। এই অগ্রিম কর হলো আগাম আদায় করা মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট)।
কোম্পানিগুলো দাবি করছে, এতে তেলের দামের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। পার্থক্য এটুকুই, সরকার আগে ভ্যাট অগ্রিম আদায় করত। এখন বিক্রির পরে আদায় করবে। এতে কোম্পানিতে নগদ টাকার প্রবাহে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
কর ছাড়ের পরও দাম কেন বাড়ছে জানতে চাইলে শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল বিপণনকারী সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘বিশ্ববাজারে দাম অনেক বেশি। আমরা সরকারের অনুরোধে ও মানুষের কথা চিন্তা করে ছাড় দিয়ে মূল্য প্রস্তাব করেছি। এই দর শিগগিরই কার্যকর হবে।’