করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও লকডাউন বলবৎ রয়েছে। আর এই লকডাউন বলবৎ থাকাবস্থায় মার্কেট খোলার ব্যাপারে বিধি নিষেধ আরোপ থাকলেও সেই বিধি নিষেধ উপেক্ষা করেই নারায়ণগঞ্জ শহরে খোলা হচ্ছে মার্কেট। কোনো কোনো মার্কেট বন্ধ থাকলেও ভিতরের দোকান পাট খোলা রেখে পরিচালনা করা হচ্ছে ব্যাবসায়িক কার্যক্রম। শহরের প্রায় সকল মার্কেটেই এমন অবস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে। লকডাউন যেন ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে।
সূত্র বলছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমনের প্রথম ধাপে হটস্পট হিসেবে পরিচিত পাওয়া নারায়ণগঞ্জ দ্বিতীয় ধাপেও বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা এবারও হটস্পট থেকে কম নয় হিসেবে উল্লেখ করছেন। প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। প্রায় সময়েই দুই শতাধিকের কাছাকাছি পৌছে যাচ্ছে শনাক্তের সংখ্যা। সেই সাথে বেড়ে চলছে মৃত্যুর সংখ্যা। তারপরেও নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে কোনো সচেতনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে কঠোর লকডাউন আরোপ করা হয়। লকডাউন কার্যকর করতে সরকারের ১৩ দফা বিধিনিষেধে বলা হয়েছে, অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রবাদি কেনা, চিকিৎসা সেবা, মরদেহ দাফন বা সৎকার এবং টিকা কার্ড নিয়ে টিকার জন্য যাওয়া) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।
একই সাথে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লকডাউন চলবে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত। বর্ধিত লকডাউনেও চলমান বিধিনিষেধ থাকবে। কিন্তু এই লকডাউন অমান্য করেই নারায়ণগঞ্জ শহরে খুলতে শুরু করছে মার্কেট।
২১ এপ্রিল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের শরীফ সুপার মার্কেট পুরোটাই খোলা রাখা হয়েছে। সমবায় মার্কেট পুরো না খুললেও কিছু কিছু দোকান পাট খোলে রাখা হয়েছে। ফ্রেন্ডস মার্কেটে গিয়েও দেখা যায় বিভিন্ন দোকান পাট খোলে রাখা হয়েছে।
একইভাবে শহরের কালীবাজার স্বর্ণপট্টি এলাকাতে গিয়ে দেখা গেছে বিভিন্ন রকমের দোকানপাট খোলা রাখা হয়েছে। শহরের অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা টানবাজারে গিয়েও দেখা গেছে মার্কেট খোলা রাখা হয়েছে। কোনো কোনো মার্কেট বন্ধ থাকলেও মার্কেটের ভিতরের দোকানপাট খুলে রাখা হয়েছে। সেই সাথে রয়েছে ক্রেতাদের ভিড়। একে অপরের শরীর ঘেসেই বিভিন্ন জিনিস কেনাকাটা করছেন। স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই পরিলক্ষিত হচ্ছে না তাদের মাঝে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও কোনো তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। লকডাউন জারির প্রথমদিকে কিছুটা তৎপরতা পরিলক্ষিত হলেও মাঝামাঝি সময়ে এসে তারা নিরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। কে লকডাউন মানছে আর কে লকডাউন মানছে তা নিয়ে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। যদিও শহরজুড়ে লকডাউনের বিষয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। আর এ মাইকিং কার্যক্রমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছেন তারা।