সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢাকার রাস্তায় ধারণ করা একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সর্বাত্মক লকডাউন চলাকালে রাজধানীতে পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়ায় পুলিশ সদস্য ও ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে রীতিমতো তুলকালাম কাণ্ড করেছেন এক নারী চিকিৎসক। ভিডিওকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে ডাক্তার ও পুলিশদের বাগযুদ্ধ, যুক্তি-পাল্টাযুক্তি চলছে। ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা নিয়ে ডা. জেনির বাবা শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম গণমাধ্যমকে বলেন-
করোনা মহামারীর এই সময়ে করোনা যুদ্ধের সম্মুখ যোদ্ধাদের মধ্যে হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া বাকবিতণ্ডার ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। তিনটি পক্ষই করোনা যুদ্ধের সম্মুখ যোদ্ধা। আমার মেয়ে চিকিৎসক হিসেবে তার পরিচয় দেওয়ার পরও কেন যে তার সঙ্গে এমন আচরণ করা হলো তা আমার বোধগম্য নয়’। বাকবিতণ্ডার যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সে বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম বলেন, ‘এটা দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আমার মেয়ে পরিচয় দেওয়ার পর তাকে ভুয়া বলায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা তো পোশাক দেখেই কয়েকটি পেশার মানুষকে চিহ্নিত করতে পারি।
শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম বলেন, ‘সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ইত্যাদি পেশার লোকদের পোশাকই বলে দেয় তাদের দায়িত্ব কী। তেমনি অ্যাপ্রোন পরলে আমরা বুঝতে পারি ওই ব্যক্তি চিকিৎসা সেবার সঙ্গে জড়িত। আমার মেয়ের পরনে অ্যাপ্রোন ছিল, তাতে তার পরিচয়ও লেখা ছিল। গাড়িতে স্টিকার এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যয়নও সাঁটানো ছিল। এরপরও তার সঙ্গে এমন আচরণ এটি অনাকাঙ্ক্ষিত। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সব পেশার লোকজন মিলেমিশে সরকারি দায়িত্ব পালন করবেন’।
ডা. জেনির বাবা শওকত আলী সরকার বীরবিক্রমের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায়। বর্তমান চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি। শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম মহান মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। তিনি একজন খেতাবপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা।
শওকত আলী সরকার বীরবিক্রমের চার মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি বড়। তার দ্বিতীয় মেয়ে বুয়েটের শিক্ষক। তিনি বর্তমানে পিএইচডি করতে আমেরিকায় অবস্থান করছেন। তৃতীয় মেয়ে ডেন্টাল চিকিৎসক। চতুর্থ মেয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। তিনিও উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকায় অবস্থান করছেন। ছোট দুই ছেলে বুয়েট থেকে পড়াশোনা শেষ করেছে।