মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে কলকাতার উপ-হাইকমিশন চত্বরে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বললেন বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষাকে পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্ব বাংলাদেশের।
বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষ বলেন ফিরহাদ হাকিম, যিনি কলকাতার মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন।
এরপর আবেগ তাড়িত হয়ে নিজের হজযাত্রার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন ‘আমি যখন হজ করতে গিয়েছি ওখানে দেখেছি চার পাশে বাংলায় নির্দেশ লেখা আছে। কোথাও কিন্তু হিন্দিতে কিছু লেখা ছিল না। বাঙালি হিসেবে আমার গর্ব হয়েছিল আর বুঝেছিলাম এর কৃতিত্ব বাংলাদেশের বললেন ফিরহাদ।
আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দূত হয়েছি ভাষা দিবসের দিন সকল বাংলাদেশিকে শুভেচ্ছা বার্তা দিতে এসেছেন।
ফিরহাদ হাকিম বলেন, দুই বাংলার সম্পর্ক খুবই ভালো এবং আগামী দিনে তা আরো দৃঢ় হবে।
অন্যবারের মতো এবারও জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শুরু হয় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে। পতাকা অর্ধনমিত করেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।
এরপর বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন আয়োজিত প্রভাতফেরি শুরু হয়। প্রভাতফেরি শেষে উপ-হাইকমিশন চত্বরে অবস্থিত শহিদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।
পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর উপ-হাইকমিশনের বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক গৌতম খাস্তগীর, বিধায়ক অসিত মিত্র, বিশিষ্ট কবি বরুন চক্রবর্তী, মানিক দে, কবি ও লেখক গোপাল চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গের ইউনিসেফ প্রধান মো. মহিউদ্দিন, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম পরিষদের সম্পাদক গোপাল দাস ও ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্পাদক ইলোরা দে প্রমুখ।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে এ মিশনের কাউন্সিলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) রিয়াজুল ইসলাম, কাউন্সিলর (কন্স্যুলার) মো. বশির উদ্দিন, প্রথম সচিব (প্রেস) ড. মো. মোফাকখারুল ইকবাল এবং প্রথম সচিব (রাজনৈতিক-১) শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতি।
একুশে ফেব্রুয়ারি মহান ‘ভাষা শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’-এর গুরুত্ব তুলে ধরতে বিকেলে উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কলকাতায় বিভিন্ন দেশের কনস্যুলেট প্রতিনিধিরা তাদের নিজ নিজ ভাষায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করেন। এতে অংশগ্রহণ করে ভারত, নেপাল, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইতালি, থাইল্যান্ড, ফরাসী, স্প্যানিশ ও পর্তুগীজ।