বাংলাদেশে মাদক আইস (ক্রিস্টাল মেথ) সহজলভ্য নয়। এ কারণে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে অভিজাত এলাকার তরুণ-তরুণীদের কাছে ‘হোম সার্ভিসের’ মাধ্যমে এই মাদক পণ্যটি নিয়মিত বিক্রি করতো মাদক কারবারি চন্দন রায়।
বুধবার (২ নভেম্বর) দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতারের ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্লাহ কাজল এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বুধবার (২ নভেম্বর) ভোর পর্যন্ত ওয়ারী থানার হাটখোলা রোড এলাকার গ্রিন জোন টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে থেকে ৫০০ গ্রাম আইসসহ (ক্রিস্টাল মেথ) মাদক সিন্ডিকেটের মূল হোতা চন্দন রায়কে (২৬) গ্রেফতার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রলণ অধিদফতর।
অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, ‘ডিগ্রি পাস করে কেমিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করা অবস্থায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে চন্দন রায়। পরে চাকরি ছেড়ে লাগেজ পার্টির সদস্য হয়ে বিদেশ থেকে স্বর্ণ ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী পাচারের কাজে জড়ায় সে। করোনার সময়ে মালয়েশিয়ায় থাকা তার আত্মীয় শংকর বিশ্বাস এবং নোয়াখালী এলাকার হাবিবের মাধ্যমে ‘আইস’ মাদক পাচার চক্র গড়ে তোলে। চন্দন রায় মূলত রাজধানীর বনানী, বারিধারা ও গুলশান এলাকায় মাদক সরবরাহ করে আসছিল।’
তিনি বলেন, ‘গত মাসে বনানী-বারিধারা-গুলশান এলাকা থেকে ‘আইস’-সহ মাদক সিন্ডিকেটের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাদক পাচারচক্রের মূল হোতা চন্দন রায়কে আজ গ্রেফতার করা হয়েছে।’
জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, ‘মালয়েশিয়া থেকে সোনা ব্যবসার আড়ালে আইস পাচারকালে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) রমনা বিভাগের হাতে ৬০০ গ্রাম আইসসহ চন্দন রায় গ্রেফতার হয়। তখন তার পাঁচ সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জামিনে বের হয়ে চন্দন ফের একই কাজে সক্রিয় হয়।
তিনি জানান, টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে প্রতি কেজি ‘আইসের’ মূল্য দাঁড়ায় ৩০-৩৫ লাখ টাকা। আর সেবনকারীরা প্রতি গ্রাম কেনে ৫ হাজার টাকা করে।
গ্রেফতারকৃত চন্দন রায়ের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রাজধানীর ওয়ারী থানায় একটি মামলা করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।