সাইপ্রাস ইউরোপসহ ভূমধ্যসাগর সাগর এলাকার বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অপরাধে মানব পাচার চক্রের মূলহোতা সাইপ্রাসের তালিকাভুক্ত অপরাধী সোহেল মজুমদার প্রকাশে হাবিবুর রহমান প্রকাশ্যে আদনানসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ সিপিসি ২ এর সদস্যরা।
সোমবার দুপুরে কুমিল্লা র্যাব-১১ সিপিসি ২ এর ইনচার্জ মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার মোহাম্মদ মিলন মিয়া নামে এক ব্যাক্তি কুমিল্লা র্্যাব ১১ সিপিসি ২ এর ক্যাম্পে একটি অভিযোগ দায়ের করেন,অভিযোগে তার ছোটভাই সাইফুলকে বিদেশে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধাপে ১৫ লাখ টাকা নেয় একটি চক্র।
গত ১ জানুয়ারি সাইপ্রাস নেওয়ার কথা বলে চক্রটি দুবাই নিয়ে যায়। দুবাই নিয়ে ছয় মাস আটকে রেখে আরো চার লক্ষ টাকা দাবি করে। উপায়ন্ত না দেখে ভুক্তভোগী পরিবার র্যাবের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ১৮ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলা সদর দক্ষিণ মডেল থানার জাঙ্গালিয়া বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে মানব পাচার চক্রের মূল হোতা সোহেল মজুমদার সহ তিন পাচারকারীকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১।
র্যাব আরো জানান, আটককৃত আসামি মানব পাচার চক্রের মূলহোতা সোহেলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামি সোহেল সাইপ্রাস নেয়ার কথা বলে সাইপ্রাসের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূয়া সার্টিফিকেট, নথিপত্র তৈরি করে ভুক্তভোগীদের প্রথমে দুবাই নিয়ে যায়, পরে ১/২মাস পর তাদেরকে সাইপ্রাস নিয়ে হতো। এমনভাবে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৫-৩০ জনকে সাইপ্রাস নিয়ে গেছে যার বিনিময়ে সবার কাছ থেকে গড়ে ৭/৮ লাখ টাকা করে নিয়েছে প্রতারক সোহেল। পরে মানসম্মত কাজ না পেয়ে ভুক্তভোগীরা সোহেলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে, সোহেল তাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
তাছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, প্রতারক সোহেল সাইপ্রাস থেকে কয়েকজন প্রবাসীকে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রেরণ করে বেশ পরিচিত লাভ করে। যার সুবাধে ভুক্তভোগী সাইপ্রাস প্রবাসী ইব্রাহিম আরো ৪০-৫০ জন সাইপ্রাস প্রবাসীকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের মাধ্যমে প্রেরণ করতে জনপ্রতি ৭ লাখ করে প্রতারক সোহেলকে প্রদান করে। সোহেল সমস্ত টাকার প্রায় অর্ধেক টাকা অনলাইন জুয়া খেলা হেরে যাওয়ায় জানুয়ারি মাসে সাইপ্রাস থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসে এবং ভুক্তভোগীদের সাথে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালে সাইপ্রাস সরকার প্রতারক সোহেলকে তালিকাভুক্ত অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে ভুয়া নথিপত্র, প্রতারণা ও মানি লন্ডারিং আইনে ৮ টি অভিযোগ ইস্যু করে।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে এছাড়াও অন্তত ১০ টি অভিযোগ রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে সদর দক্ষিণ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।