1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কু‌মিল্লায় ডি‌বির পৃথক অ‌ভিযা‌নে ইয়াবা ফে‌ন্সি‌ডিল আটক ৩ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত – এম সাখাওয়াত হোসেন দে‌শের প্রয়োজ‌নে বিএনসিসির সদস্যরা বিশাল শক্তি হিসেবে কাজ কর‌বে – সেনাপ্রধান কু‌মিল্লায় সাংবা‌দিক‌দের সা‌থে পু‌লিশ সুপা‌রের মত‌বি‌নিময় নারায়নগন্জ মহানগর বিএনপির র‍্যালিতে কৃষক দলের অংশগ্রহন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নারায়ণগ‌ঞ্জে বিএন‌পির র‍্যালি গোপালগ‌ঞ্জে দিনমুজুর‌কে হত্যা মামলায় গ্রেফতার, নবজাতক দুই বোন নিয়ে দিশেহারা ছোট ভাই শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ কর‌তে হ‌বে, না করলে প্রশাসক নিয়োগ হ‌বে- সাখাওয়াত বাংলাদেশ থেকে জাপানি সৈন্যদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিবে আজারবাইজানে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

জ্বালানি সঙ্কট: রাশিয়া থেকে বাংলাদেশ তেল কিনবে কীভাবে, রুবলের ব্যবস্থা কী, ভারতসহ অন্যান্য দেশ কী করছে

নাগরিক খবর অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২২ আগস্ট, ২০২২
  • ১৪৮ বার পঠিত

রাশিয়ার কাছ থেকে সরাসরি জ্বালানী তেল কেনার কী কী পথ রয়েছে সেটা এখন খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছিলেন, জ্বালানি সঙ্কটজনিত দুর্ভোগ এড়াতে রাশিয়া থেকে কম দামে তেল কেনার সম্ভাব্যতা যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর এ নিয়ে কিছু তোড়জোড় চলছে, তবে তা এখনো আলোচনা এবং যাচাই বাছাই পর্যায়েই রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

এখন পর্যন্ত রাশিয়া থেকে তেল কেনা এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রুবলের ব্যবহার নিয়ে বাংলাদেশ অনাগ্রহী ছিল।

কিন্তু জ্বালানির বর্ধিত দামের কারণে দেশের অর্থনীতিতে যে চাপ পড়েছে, তার কারণে এখন কম দামে জ্বালানি কেনার বিকল্প উৎসের সন্ধান করা হচ্ছে।

কারণ তাতে আমদানি খরচ কিছুটা কমলে বাড়তি খরচের চাপ সামাল দেয়া যাবে।

পুতিনের যেসব কৌশলে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের নাটকীয় উত্থান
তবে বিভিন্ন পক্ষের সাথে কথা বলে জানা যাচ্ছে, রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনার ব্যাপারে সবচেয়ে বড় যে বাধা হবে তা হল কী উপায়ে এর মূল্য পরিশোধ করবে বাংলাদেশ।

এ ব্যাপারে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা কী? বাংলাদেশই বা কীভাবে জ্বালানী তেলের মূল্য পরিশোধ করতে পারবে?

রুবলে কারা তেল কিনছে? কিভাবে কিনছে?
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর ১২০০ বহুজাতিক কোম্পানি রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসাবাণিজ্য বন্ধ করে বা সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেয়।

একইসাথে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।

ভ্লাদিমির পুতিনের নানা উদ্যোগের কারণে যুদ্ধের মধ্যেও রুবল এখন বেশ শক্তিশালী। এসব কারণে দেশটির অর্থনীতি কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। কিন্তু দ্রুতই সে অবস্থা কাটিয়ে ওঠে রাশিয়া।

এর বড় কারণ রাশিয়ার জ্বালানি তেলের মজুদ এবং তা বিক্রিতে দেশটির নিজস্ব মুদ্রা রুবলে কেনার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের পরে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ রাশিয়া।

ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিয়ম করে দেন যে রাশিয়ার উৎপাদিত তেল এবং গ্যাস কিনতে হলে রুবলে মূল্য পরিশোধ করতে হবে।

সেই সাথে দেশটি থেকে বিদেশে ডলার পাঠানো বা কোন পণ্যের মূল্য পরিশোধ করার ক্ষেত্রেও একটি নির্দিষ্ট সীমা বেধে দেয়া হয়।

আর এখনো অনেক দেশ রাশিয়ার সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করেনি।

এসবের মধ্যে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের দর বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্যবসা ও অর্থনীতি বিষয়ক বিশ্বখ্যাত সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ বলছে, রুবল গত পাঁচ বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে।

রাশিয়ার বদলে এখন থেকে ইউরোপের গ্যাস আসবে আমেরিকা থেকে
ডলারের বিপরীতে রুবলের উত্থানের পেছনে রয়েছে চীন, ভারত ও তুরস্কের মত বড় অর্থনীতির দেশগুলো, যারা এখনো রাশিয়ার কাছ জ্বালানি তেল কিনছে এবং ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশ রাশিয়ার সাথে রুবলে বৈদেশিক বাণিজ্যের লেনদেন পরিচালনা করছে।

ডলার
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
ডলারের মূল্যের উর্ধ্বগতিতে সঙ্কটে পড়েছে বাংলাদেশ

চীন
জুন মাসের মাঝামাঝি ব্লুমবার্গের এক রিপোর্টে জানা যায় যে সৌদি আরবকে হঠিয়ে এখন রাশিয়া এখন সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত তেল বিক্রি করছে চীনের কাছে।

মে মাসে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি ডলারের অপরিশোধিত তেল কিনেছে চীন। এক বছর আগে এই পরিমাণ ছিল এর অর্ধেক।

সেই সঙ্গে রুশ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজিও চাহিদাও বেড়েছে চীনের বাজারে।

এর বাইরে রাশিয়ার গ্যাস এবং কয়লার চাহিদাও বেড়েছে চীনে।

যেহেতু রাশিয়ার এখনকার নিয়ম অনুযায়ী রুবলে কিনতে হচ্ছে জ্বালানি, সে কারণে রুবল শক্তিশালী হচ্ছে দিনকে দিন।

সুইফট কী? সুইফটের সিদ্ধান্ত কে নিয়ন্ত্রণ করে?
তুরস্ক
এ মাসের শুরুতে রাশিয়ার সোচিতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে বৈঠকের পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেছেন, রুবলে বৈদেশিক লেনদেন চালাতে দুই দেশ একমত হয়েছে।

রাশিয়া থেকে তুরস্কের কেনা গ্যাসের মূল্য পরিশোধের একটি অংশ রুবলে করা হবে।

এর ফলে তুরস্ক এবং রাশিয়া এই দুই দেশের মধ্যে আলাদা অর্থনৈতিক সামর্থ্য গড়ে উঠবে বলে মনে করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।

তুরস্কের মোট চাহিদার এক চতুর্থাংশ জ্বালানি রাশিয়া থেকে আসে।

রুবলে লেনদেনের পাশাপাশি তুরস্কে রাশিয়ার ব্যাংকিং কার্ড চালুর চেষ্টা চলছে।

মি. এরদোয়ানের সফরের সময় রাশিয়া এবং তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানেরা বৈঠক করেছেন।

বিশ্ববাজারের সাথে বাংলাদেশে তেলের দাম সমন্বয় হয় না কেন?
ভারত
ভারত এ বছর রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেলের আমদানি বাড়িয়েছে।

বছরের শুরুতেও ভারতের মোট তেল আমদানির দশমিক দুই শতাংশ আসত রাশিয়া থেকে।

কিন্তু এ বছরের মে মাস নাগাদ সেটি মোট আমদানি ১০ শতাংশে পৌঁছেছে।

বছরের শুরুতে ভারত যেখানে রাশিয়া থেকে দিনে ২৫ হাজার ব্যারেল তেল আমদানি করত, মে-জুন মাসে সেটি ৬ লাখ ব্যারেলে উন্নীত হয়েছে।

ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে কড়াকড়ি করেছে।

সে কারণে রাশিয়া এখন ভারতকে ছাড়কৃত মূল্যে তেল সরবারহ করছে।

মধ্যপ্রাচ্য থেকে যে দামে তেল কেনে ভারত, তার তুলনায় ব্যারেল প্রতি প্রায় ২০ ডলার বা তারও বেশি ছাড় দিচ্ছে রাশিয়া৷

তাই ভারত এখন যে সব দেশ থেকে তেল কেনে সেই তালিকায় দুই নম্বরে উঠে গেছে রাশিয়া৷

রাশিয়া থেকে ভারতে অপরিশোধিত তেলের আমদানি বৃদ্ধির পেছনে এটাই প্রধান কারণ।

এই মূহুর্তে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং ইউরেশিয়ান ইকনোমিক ইউনিয়নের সদস্য বেলারুশ এবং কাজাখস্থানই কেবল মস্কোর সাথে ভারতের চাইতে বেশি রুবলে লেনদেনকারী দেশ।

তবে রুবলে ভারতের এই লেনদেন এ বছরই বেড়েছে এমন নয়।

দুই হাজার একুশ সালে রাশিয়ার সাথে ভারতের যত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক লেনদেন হয়েছে, তার প্রায় সাড়ে ৫৩ শতাংশ ভারত পরিশোধ করেছে রুবলে।

যেখানে দেশটির ডলারে পরিশোধিত লেনদেনের হার ছিল ৩৮ দশমিক তিন শতাংশ।

বাংলাদেশে রুবলের রিজার্ভ পরিস্থিতি
উল্লেখ্য বাংলাদেশ তার চাহিদার প্রায় পুরো তেলই মূলত আমদানি করে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো থেকে।

কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম অনেক বেড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশকে আমদানি কমাতে হয়েছে এবং এর কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশে সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে প্রায় দেড়গুণ করা হয়েছে

সে কারণেই এখন বিকল্প খুঁজতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

কিন্তু এখন যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনতে হয় এবং রাশিয়ার শর্ত অনুযায়ী রুবলেই লেনদেন করতে হয়, তাহলে ঠিক এই মুহূর্তেই সেটি করতে পারা কঠিন হবে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্ট মানুষেরা।

বাংলাদেশ এই মুহূর্তে আমদানি পণ্যের মূল্য পরিশোধ এবং রপ্তানি আয় ঘরে তোলা দুই ক্ষেত্রেই লেনদেন হয় প্রধানত মার্কিন ডলারে।

এর বাইরে পাউন্ড, ইউরো, চীনা ইউয়ান, এবং জাপানি ইয়েনেও লেনদেন হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বিবিসিকে বলেছেন, বাংলাদেশে রুবলের কোন রিজার্ভ নেই। কারণ বৈদেশিক লেনদেনে এখনো রুবল ব্যবহার করা হয় না।

দুই দেশের মধ্যে হওয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক লেনদেনের পরিমাণ একদিকে কম, অন্যদিকে সেটা ডলার কিংবা ইউরোতে শোধ করা হয়েছে এতদিন।

এর বাইরে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য দুই দেশের মধ্যে আর্থিক লেনদেনও রুবলে হয় না।

এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় এলসি খোলা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে।

ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান বিবিসিকে জানিয়েছেন, সেই ঋণপত্রও খোলা হয়েছে মার্কিন ডলার এবং ইউরোতে।

এছাড়া রুবল এখনো কনভার্টেবল বা বিনিময়যোগ্য মুদ্রা হিসেবে জনপ্রিয় না হওয়ায় সেটি বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করে এমন ব্যাংকগুলো এখনো রাখে না।

পেট্রোল-অকটেনের চাহিদা আর যোগান: পরিস্থিতি আসলে কী?
রুবলে বাংলাদেশ যেভাবে লেনদেন করতে পারে
এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজারের দর অনুযায়ী প্রতি রুবলে এক টাকা ৫৭ পয়সা পাওয়া যাবে।

যদি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে রুবলে জ্বালানি কেনার ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে মূল্য পরিশোধের জন্য তাকে কিছুটা ঝামেলায় পড়তে হবে।

অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলছিলেন, “যেমন, রুবল যেহেতু কনভার্টেবল না, সে কারণে তৃতীয় কোন মুদ্রায় কনভার্ট করে তারপর মূল্য পরিশোধ করা যাবে। এক্ষেত্রে চীনের ইউয়ান একটি বিকল্প হতে পারে। আরেকটি বিকল্প হতে পারে, রাশিয়ার সাথে বৈদেশিক বাণিজ্যের একটি অংশ দ্বিপাক্ষিক বিনিময়ের মাধ্যমে পরিশোধ করা।”

তবে, এ সবই সম্ভাব্য ব্যবস্থা।

কিন্তু বাস্তবে কার্যকর করতে হলে বাংলাদেশকে আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, তার একটি উপায় হতে পারে মূল্য পরিশোধে কারেন্সি সোয়াপ ব্যবস্থা মানে দ্বিপাক্ষিক মুদ্রা বিনিময় চুক্তি করা।

বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ শুরু করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মি. ইসলাম।

তবে তিনি জানিয়েছেন, এ নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সুত্র: বি‌বি‌সি

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com